দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নিজ দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে ৩০ দেশের ১১৭ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন (অ্যাক্রেডিটেশন) পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিলেন ২২৭ জন বিদেশি নাগরিক। তাঁদের মধ্যে ১৫৬ জন পর্যবেক্ষক এবং ৭১ জন বিদেশি সাংবাদিক। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরাও ছিলেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মিশন যথাক্রমে তাদের ২৯ ও ১০ কর্মীর পর্যবেক্ষণের অনুমতির জন্য আবেদন করে। পরে ওই দুটি মিশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না বলে ইসিকে জানিয়ে দেয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, রাষ্ট্রীয়ভাবে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে—এই তিন শ্রেণিতে বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজ করবেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রাশিয়া, ভারত, মরিশাস, শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি থাকছেন। সংস্থা হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), কমনওয়েলথ, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা, আরব পার্লামেন্ট এবং আফ্রিকান ইলেক্টোরাল অ্যালায়েন্স নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্ত থাকবে।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) সীমিত পরিসরে নির্বাচনী সহিংসতা পরিস্থিতির কারিগরি মূল্যায়ন করবে।
এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা বিদেশি নাগরিকদের তালিকায় সংখ্যার শীর্ষে আছে কমনওয়েলথ। সংস্থাটির ১৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এরপর এনডিআই এবং আইআরআইর ১২ জন, আফ্রিকার ইলেক্টোরাল অ্যালায়েন্সের ১০ জন এবং ইইউর চারজন প্রতিনিধি যুক্ত থাকবেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে। বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মধ্যে ঢাকায় জাপান দূতাবাসের ১৬ জন কর্মী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইসির অনুমোদনপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকদের তালিকায় ৩০ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, ভারত, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস, ফিলিস্তিন, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং ভুটানের নাগরিক রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানাতে বাংলাদেশের বিদেশি মিশনগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছিল সরকার। গত ১ নভেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মিশনগুলোতে এ চিঠি পাঠানো হয়। এতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহীদের ২১ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে বলা হয়েছিল।