কাট্টলী উপকূলে পার্কের জন্য গাছ কাটার অভিযোগ বন বিভাগের

চট্টগ্রামের মানচিত্র
চট্টগ্রামের মানচিত্র

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কাট্টলী উপকূলে একটি বিনোদন কেন্দ্র (পার্ক) নির্মাণের কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এই পার্ক করতে গিয়ে সোমবার উপকূলের বেশকিছু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বন বিভাগ। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, ওই জায়গায় নতুন করে ১০ হাজার গাছ লাগিয়ে পাখির আবাস গড়ে তোলা হবে।

পার্ক নির্মাণের অংশ হিসেবে জায়গাটি সমতল করার জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহদাত হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম উপস্থিত ছিলেন। যে জায়গায় পার্ক করার জন্য গাছ কাটা হয়েছে সেটি ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। 

তবে বন বিভাগ বলছে, জায়গাটি বন আইনের ৪ ও ৬ ধারায় গেজেট নোটিফিকেশনকৃত। সংরক্ষিত বনের জন্য ২০ ধারায় নোটিফিকেশন হওয়া বাকি রয়েছে। নতুন কোনো চর উঠলে তাতে বন সৃজন করে উপকূলীয় বন বিভাগ। তখন পর্যায়ক্রমে ৪ ও ৬ ধারায় নোটিফিকেশন করা হয়। এর পর ২০ ধরায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। কাট্টলী উপকূলে যেখানে পার্কের কাজ চলছে সেখানে তাদের নিজস্ব বাগান রয়েছে বলে উপকূলীয় বনবিভাগ জানায়।

জানতে চাইলে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ১২টি বড় কেওড়া গাছ কাটা হয়েছে। এ ছাড়া ছয় থেকে আট ইঞ্চি প্রশস্ততার (বেড়) পাঁচ হাজার গেউয়া, ছেইলা ও বাইন গাছ স্কেভেটর দিয়ে নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু তা আমাদের জানানো হয়নি।

জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কাট্টলী সমুদ্র উপকূলে গাছ কাটা শুরু হয়। এ সময় বড় বড় কেওড়া গাছগুলো কুড়াল ও করাত দিয়ে কাটা হয়। ছোট গেউয়া ও বাইন গাছগুলোর ওপর স্কেভেটর চালিয়ে দেওয়া হয়।

কাট্টলী উপকূলে ১৯৪ একর জায়গা সম্প্রতি জেলা প্রশাসন অবৈধ দখলমুক্ত করে। ওই জায়গার কিছু অংশে একটি বিনোদন কেন্দ্র করার কথা প্রশাসন থেকে জানানো হয়। ওই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১০ হাজার গাছ লাগানোর কথা রয়েছে। এখানে পাখির আবাসস্থল গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান।

রাকিব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার করা জায়গায় বিনোদন কেন্দ্র করার জন্য জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। সেভাবে কোনো গাছ নষ্ট করা হয়নি। পাশাপাশি নতুন করে ১০ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা চলছে। এমন গাছ লাগানো হবে যেসব গাছে পাখি বসে। এ ছাড়া সমুদ্র দেখার জন্য একটা পর্যবেক্ষণ টাওয়ার করা হবে।

উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগে থেকে কোনো খবর না দিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপকূলীয় এলাকায় গাছপালা কেটে ফেলেছেন। বিষয়টা আমরা মন্ত্রণালয়কে জানাব। এর পর মন্ত্রণালয় কি নির্দেশনা দেয় দেখা যাক।