বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট। ছবি: হাসনাত আবদুল্লাহর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট। ছবি: হাসনাত আবদুল্লাহর

সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুক পোস্ট হাসনাত আবদুল্লাহর

মাওলানা সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আজ বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি তাঁর পোস্টে সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

গাজীপুরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ

হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, সাদ-সমর্থিত ‘সচেতন ছাত্রসমাজের’ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে তাঁরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গীতে যান। সেখানে আলোচনা শেষে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। মাওলানা সাদের ভিসা–জটিলতা নিরসনে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তাঁরা টঙ্গী ময়দানে জোরের শর্ত দেন এবং ২৫ তারিখ মাঠ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। টঙ্গীতে এই তিন বিষয়ে আলোচনা হয়।

হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, আলোচনায় তাঁরা এটাও স্পষ্ট করেন, এগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। এ বিষয়ে কাকরাইলে মাওলানা জুবায়ের ও ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে। এই উদ্দেশ্যে তাঁরা দিবাগত রাত ২টায় কাকরাইলে আলোচনার জন্য যান। সেখানে মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য আলেম উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পৌঁছানোর পর সাদপন্থীদের একজন মুফতির একটি পোস্ট তাঁদের দৃষ্টিগোচর হয়। যেখানে খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করে বলা হয়েছে, তাঁরা নাকি তাঁদের (সাদপন্থী) জোর করার অনুমতি দিয়েছেন। এটি তাঁদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত।

হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, কাকরাইলে আলোচনাকালে সেখানে আলেমদের উপস্থিতিতে তাঁরা তাঁদের স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে তাঁরা কোনো কর্তৃপক্ষ নন। তাঁরা আলোচনা করে কাকরাইল থেকে টঙ্গীতে গিয়ে কথা বলবেন। এরপর পারস্পরিক মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘আলোচনার মধ্যেও সাদপন্থী ঐ মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি, আপনারা যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করেন, তাহলে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা কাকরাইলে আলেমদের উপস্থিতিতে সাদপন্থীদের আরও বলেছি, কোনোভাবেই আপনারা ময়দানে প্রবেশ করবেন না এবং আমাদের নিয়ে যে ভিডিও প্রচার করেছেন, তা মুছে ফেলবেন। কিন্তু এর আগেই এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর পোস্টে সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান করছি। তাবলিগ একটি দ্বীনি ও ধর্মীয় ইস্যু। এর ফলে আমরা মনে করি, তাবলিগসহ ধর্মীয় সব বিষয়াদি ওলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।’