খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সংঘর্ষের পর ঘরবাড়ি ও দোকানে আগুন। ১৯ সেপ্টেম্বর
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সংঘর্ষের পর ঘরবাড়ি ও দোকানে আগুন। ১৯ সেপ্টেম্বর

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বৌদ্ধদের জানমালের সুরক্ষার দাবি

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের জানমালের সুরক্ষা চেয়েছে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটি। দেশের বৌদ্ধরা যাতে কোথাও কোনো বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার না হয়, সেই দাবি জানায় তারা।

‘সংগঠন পরিচিতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় বৌদ্ধদের অভিব্যক্তি প্রকাশ’ উপলক্ষে শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজকের এ সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করল কমিটিটি। তারা বলেছে, দেশে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে শান্তি ও সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে তাদের এ যাত্রা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটি একটি অরাজনৈতিক বৌদ্ধধর্মীয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। দেশের সব বৌদ্ধ নাগরিককে একটি প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চল ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মোর্চা এটি।

বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে ঢাকা ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের মহাধ্যক্ষ ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরোকে। সদস্যসচিব হয়েছেন বৌদ্ধনেতা ও মানবাধিকারকর্মী অশোক বড়ুয়া। জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সমন্বয়কারী, যুগ্ম সদস্যসচিব, অর্থ সচিব, সহ–অর্থ সচিব, প্রচার সচিব, সহপ্রচার সচিব, আইসিটি সচিব, সহ–আইসিটি সচিব, সদস্য পদে আরও ৪৪ জন এ কমিটিতে রয়েছেন। সংগঠনের পরিধি আরও বাড়বে বলেও সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অশোক বড়ুয়া। তাতে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি, বৌদ্ধবিহারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে তাঁরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত ও মর্মাহত।

পাহাড়ি ও বাঙালি—উভয় পক্ষকে ধৈর্যধারণ ও সহিষ্ণু হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কমিটি বলেছে, এ ঘটনার জেরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য স্বার্থান্বেষী কোনো মহল যাতে উসকানিমূলক ঘটনা ঘটাতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সরকার পতনের পর বৌদ্ধ সমাজের পাশে দাঁড়ানোয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ, শীর্ষ রাজনৈতিক দল ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এ কমিটি। একই সঙ্গে বৌদ্ধদের উপাসনালয় সুরক্ষা দেওয়ায় সেনাবাহিনীকেও ধন্যবাদ জানিয়েছে তারা।

প্রবারণা পূর্ণিমায় সরকারি ছুটি দেওয়া, ওই দিন নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা, প্রবারণা পূর্ণিমার পর বৌদ্ধদের মাসব্যাপী চলা ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদানে বৌদ্ধবিহারে নিরাপত্তা দেওয়া প্রভৃতি দাবি জানিয়েছে এ কমিটি।

আজকের সভায় বৌদ্ধ সমাজ সুরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো উপস্থিত ছিলেন না। ফলে সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কমিটির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান পি আর বড়ুয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান অসীম রঞ্জন বড়ুয়া, স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী ও চিন্ময় বড়ুয়া, সমন্বয়ক ভদন্ত স্বরূপানন্দ ভিক্ষু, প্রচার সচিব হিমাদ্রি বড়ুয়া প্রমুখ।