ক্যাম্পাসে গেলেই চোখ জুড়িয়ে যাবে। চারদিকে সবুজের সমারোহ। পাহাড় থেকে কখনো নেমে আসে মায়া হরিণ। কখনো দেখা মেলে শজারু, অজগরের। ৩০০ প্রজাতির ৪৫ হাজার উদ্ভিদের যেন এক স্বর্গরাজ্য।
বলছিলাম চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের কথা। চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ২০ একর জায়গার ওপর ক্যাম্পাসের অবস্থান। ১৯৬১ সালে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এ নৈসর্গিক ক্যাম্পাস চালু হয়। তখন থেকেই হাজারো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে পা রেখে মুগ্ধ হয়েছেন। পরীক্ষার ফলাফলেও প্রতিবার এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এগিয়ে থাকে। আর এবার বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২৩-এ প্রথম স্থান অর্জন করেছে এই কলেজ। বুধবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবেন কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মুজিবুল হক সিকদার।
পুরস্কারের ঘোষণা আসার পর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। অধ্যক্ষ কর্নেল মুজিবুল হক সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্রাণ চেষ্টায় সারা বছর ধরেই কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। এবার স্বীকৃতি মিলছে। বৃক্ষরোপণে প্রথম স্থান অর্জন করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এ জন্য সবাই অত্যন্ত আনন্দিত।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবুজ পাহাড়ের কোলে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন বনজ, ফলদ, ভেষজ, শোভাবর্ধনকারী ও দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় ৩০০ প্রজাতির প্রায় ৪৫ হাজার উদ্ভিদ রয়েছে এ ক্যাম্পাসে। এখানে রয়েছে শিক্ষার্থীদের গ্রিন ক্লাব। ক্লাবের মাধ্যমে বছরব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। শুধু গাছপালা নয়, সবুজ এ ক্যাম্পাসে গুইসাপ, শজারু, অজগর, কচ্ছপ, বন্য শূকর, বক, শালিক, চিল, ব্যাঙ, টিয়া, বানর, বাদুড়, বেজি, কাঠঠোকরা, দোয়েল, ঘুঘু, প্যাঁচা, ফিঙে, বন বিড়াল, বন মোরগ, ডাহুক, কোকিল, কাঠবিড়ালিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গিরগিটিও দেখা মিলবে। মায়া হরিণ তো আছেই।
কলেজের অধ্যক্ষ জানান, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রকৃতি, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে এসব বিষয়ে হাতে-কলমে জানাতে ক্যাম্পাসে নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। মূলত সব দিক বিবেচনা করে সরকার এ পুরস্কার প্রদান করে।