টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিং

তালিকায় ঢাবি, এনএসইউসহ বাংলাদেশের ৫ বিশ্ববিদ্যালয়

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ (টিএইচই) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং ২০২৩’–এ বাংলাদেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আছে এবারের তালিকায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় আছে ৬০১–৮০০ ক্রমের মধ্যে। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১২০১-১৫০০ ক্রমের মধ্যে। গত বছর এই তালিকায় (ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ২০২২)  ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগে ২০১৬ সালে এই র‍্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৬০১ থেকে ৮০০–এর মধ্যে। এরপর ২০১৭ সালে টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংয়ে জায়গা হয়নি দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের। ২০১৮ সালের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক হাজারের ওপর চলে যায়। এরপর ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালেও সেরা এক হাজারে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করতে পারেনি।

বুধবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ, দেশের ইতিহাসে এই প্রথম পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে এনএসইউ একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এ অর্জনের পর এনএসইউর উচ্চশিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

১০৪টি দেশের ১ হাজার ৭৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই র‍্যাঙ্কিং করা হয়েছে। বিভিন্ন মূল্যায়ন সূচকে মান যাচাই-বাছাই করে টাইমস হায়ার এডুকেশন। শিক্ষাদান (টিচিং), গবেষণা (রিসার্চ), গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশন), আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি (ইন্টারন্যাশনাল আউটলুক) এবং ইন্ডাস্ট্রি ইনকামের (শিল্পের সঙ্গে জ্ঞানের বিনিময়) ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা করা হয়।

টাইমসের তালিকায় গত পাঁচ বছরের মতো এবারও এক নম্বরে আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এবার সেরা পাঁচে আছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।

টাইমস হায়ার এডুকেশনের ওয়েবসাইটে র‌্যাঙ্কিংয়ে নির্ধারণে বিবেচিত সূচকগুলোর বিশদ ব্যাখ্যাও রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষাদান সূচকটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান, অর্থাৎ র‌্যাঙ্কিংয়ে নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় সূচক গবেষণায় দেখা হয়, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকর্মের খ্যাতি-জরিপ, গবেষণা থেকে আয় এবং গবেষণার সংখ্যা ও মান। গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি সূচক হলো গবেষণা-উদ্ধৃতি। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত কাজ বিশ্বব্যাপী গবেষকেরা কতবার উদ্ধৃত করছেন, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-কর্মী অনুপাতের সঙ্গে দেখা হয় আন্তর্জাতিক যুক্ততাও। ইন্ডাস্ট্রি ইনকামে আবিষ্কার, উদ্ভাবন ও পরামর্শের মাধ্যমে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকে সহযোগিতার সক্ষমতা দেখা হয়। অর্থাৎ ব্যবসায়ীরা গবেষণায় অর্থ ঢালতে কতটা উৎসাহী এবং বাণিজ্যিক বাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশ্ববিদ্যালয় কতটুকু সক্ষম, সেটিই এ সূচকের মূল কথা।

বিশ্বের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে থাকে। টাইমস হায়ার এডুকেশন ছাড়াও যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) এগুলোর মধ্য অন্যতম। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা করে থাকে।

* বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং দেখতে এখানে ক্লিক করুন
*বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন