ফেনী নদীর তীরঘেঁষা ফেনীর কালিদহ ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের ছেওরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা পাঁচ দিন ধরে পানির নিচে। নৌকা ছাড়া এখানে চলাচল বর্তমানে প্রায় অসম্ভব। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে পুরো গ্রাম। ফলে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে এই গ্রামে।
প্রথম আলো ট্রাস্টের সহযোগিতায় ও নিজেদের সংগ্রহ করা অর্থে আজ সোমবার এই গ্রামে ত্রাণ নিয়ে যান চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। এ সময় দূর থেকে ত্রাণের নৌকা দেখে সহযোগিতার জন্য আওয়াজ দেন গ্রামের দুই বাসিন্দা মিঠুন চন্দ্র দাস ও সুমন চন্দ্র দাস। ত্রাণ নিয়ে খাবারের আগে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন দুজন।
মিঠুন চন্দ্র দাস বলেন, ‘পাঁচ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে গ্রাম। পানি মাড়িয়ে কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। কোনো জায়গায় গলাসমান, আবার কোথাও ডুবে যাওয়ার অবস্থা। খাওয়ার পানি নিয়েই বড় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এই পানি দিয়ে বড় উপকার করলেন।’
গ্রামটিতে ত্রাণ নিয়ে এর আগে গতকাল রোববার সেনাবাহিনী এসেছিল কেবল।
আজ ফেনী পৌরসভা ও ছাগলনাইয়া উপজেলার ৩০০ পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। এ সময় তাঁরা মুড়ি, গুড়, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বিস্কুট, খাওয়ার স্যালাইন, কেক, নুডলস, দিয়াশলাইসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার পৌঁছে দেন। এ ছাড়া এক হাজার বোতল পানি দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপদেষ্টা ফাহিম উদ্দিন বলেন, ‘ভেতরের অনেক গ্রামে বহু মানুষ ত্রাণ পায়নি। এখনো অনেক স্থানে হাঁটু, আবার কোথাও বুকসমান পানি। আমরা চেষ্টা করেছি ত্রাণ না পাওয়া মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে।’
এদিন ত্রাণের পাশাপাশি জরুরি ওষুধ ও ১০০ প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিনও বিতরণ করেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। গতকাল বন্ধুসভার হাতে এগুলো তুলে দিয়েছিল ইংরেজির খুদে শিক্ষক ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার উম্মে মাইসুন।
চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপদেষ্টা শিহাব জিশান বলেন, শুকনা খাবারের তুলনায় এখানে বিশুদ্ধ পানির সংকট বেশি। তাই এক হাজার বোতল পানি বিতরণ করা হয়েছে। যেহেতু অনেক মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে, তাই জরুরি ওষুধ ও ১০০ প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিনও বিতরণ করা হয়েছে।