বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফরিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন খারিজ করেছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাকিব চৌধুরী।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ফরিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন এম এ হাশেম নামের এক ব্যক্তি। আদালত তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে মামলা খারিজের আদেশ দেন আদালত।
মামলায় মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দেওয়া এম এ হাশেম দাবি করেন, ৬ নভেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেন কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফরিদুল আলম। তাঁর ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ৬ নভেম্বর কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ফরিদুল আলম। সেই বক্তব্যের ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে ফরিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা জানেন, বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কী একটা পাতি হাঁস আসছে। পিটার হাস বদমাইশ। সে বিএনপির হয়ে যে অসভ্য কাজকারবারগুলো বাংলাদেশে করছে, তাকে পেলে জবাই করে মানুষকে খাওয়াইতাম। সেই পিটার হাস, বদমাইশ।’
৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা। প্রধান বক্তা ছিলেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওচমান শরীফ প্রমুখ।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদুল আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এই ধরনের বক্তব্য দিইনি। পিটার হাস আমাদের মেহমান। আমি মেহমানদারি করার জন্য বলেছিলাম। তাঁকে জবাই করে মানুষকে খাওয়ানোর বিষয়ে বক্তব্য দিইনি।’ ভিডিওর কথা উল্লেখ করা হলেও তিনি বক্তব্যের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এর আগে ১৫ নভেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীসহ সাতজনের বিরুদ্ধেও মামলা নেওয়ার আবেদন করছিলেন এম এ হাশেম। পরে ঢাকার সিএমএম আদালত সেদিন মামলা নেওয়ার আবেদন খারিজের আদেশে দেন।
পরে এম এ হাশেমের আইনজীবী সিরাজুল আলম সরকার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মামলা খারিজের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেছেন এম এ হাশেম। আগামী ১৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ সিএমএম আদালতের খারিজের আদেশও চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে জানান আইনজীবী সিরাজুল আলম সরকার।