দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

জনগণের ভাগ্য নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনা এলাকায় হজ ক্যাম্পে হজ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১৯ মে
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত জাতি গঠনে অবদান রাখতে হজযাত্রী ও আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।

রাজধানীর আশকোনা এলাকায় হজ ক্যাম্পে আজ শুক্রবার হজ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (হজযাত্রীদের) ও আলেম-ওলামাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আমাদের শিশুরা এটি (জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ) থেকে দূরে থাকতে পারে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রস্তুত হতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এটি সব সময় মানুষের কল্যাণের ধর্ম, যা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস করে, এমন কিছু লোকের কারণে ইসলামকে নিন্দিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে, তাদের কোনো ধর্ম নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি কেউ মনে করে যে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, তা কখনোই হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা বলেননি এবং আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তা বলেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং এই অল্প কিছু মানুষই ইসলামের নিন্দার কারণ হয়ে উঠছে।’ তিনি বলেন, এই জঘন্য কাজ থেকে এই লোকদের থামাতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে আমাদের শিশুদের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের (হজযাত্রীদের) কাছে আমার সবচেয়ে বড় দাবি হলো, আপনারা আমার বাংলাদেশের জনগণের জন্য দোয়া করবেন, যাতে তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’ তিনি হজযাত্রীদের বাংলাদেশ ও দেশের জনগণকে মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য দোয়া করারও আহ্বান জানান।

আশকোনা এলাকায় হজ ক্যাম্পে হজ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা, ১৯ মে

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ঘটে। কারণ, এখানে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও পরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। তিনি হজযাত্রীদের দোয়া করতে বলেন, যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বর্তমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকে।

প্রথম হজ ফ্লাইটটি আগামীকাল শনিবার বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন। কোভিড বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৭ হাজার ৫৮৫।

কোভিড মহামারির আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেছিলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আজ বাংলাদেশকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে দেশের মানুষ অন্তত খাবার খেতে পারছে।

হজের সময় হাজিদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রার্থনা করি যেন আপনারা নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও সুন্দরভাবে হজ পালন করতে পারেন এবং সেই সঙ্গে আপনারা সুস্থভাবে দেশে ফিরে আসতে পারেন।’