মালয়েশিয়া যেতে উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই হাজারো মানুষ ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিড় করেছিলেন
মালয়েশিয়া যেতে উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই হাজারো মানুষ ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিড় করেছিলেন

মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের তিন হাজার অভিযোগ জমা

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে অনিয়ম ও যেতে না পারা কর্মীদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে গঠিত তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবস বাড়ানো হয়েছে। মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের কাছ থেকে তিন হাজার অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী আজ মঙ্গলবার নিজ দপ্তরে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগ, ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সি ও বায়রার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব তথ্য পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কমিটি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। ঈদের পর তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বসা হবে। একটা স্বচ্ছ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সব বেরিয়ে আসুক, এটাই প্রত্যাশা। যাতে মানুষ উপকৃত হয়। সময় বাড়ানোয় কর্মীদের অভিযোগ আরও আসবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, অনেক কর্মী একসঙ্গে হয়ে আবেদন করেছেন। কোনো কোনো আবেদনে একসঙ্গে কয়েকজন কর্মীর নাম আছে। তাই অভিযোগপত্র তিন হাজার হলেও অভিযোগ জানানো কর্মীর সংখ্যা আরও বেশি হবে। এখনো চূড়ান্ত হিসাব করা হয়নি।

প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যাদের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, তাদের কোনো দিন ছাড় দেব না। তাদের আইনের আওতায় এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্মীদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে, যাতে তাঁরা সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পান।’

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে গঠিত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, কোনো চক্র মেনে নেওয়া হবে না। সব এজেন্সি যাতে কাজ করতে পারে, সেটাই সরকারের চাওয়া। মালয়েশিয়া গিয়ে কর্মীদের কাজ না পাওয়া এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চক্র গড়ে ব্যাপক অনিয়মের কারণে আন্তর্জাতিক চাপে শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। দেশটি অনুমোদিত কর্মীদের প্রবেশের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয় ৩১ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে অনেক কর্মী বাংলাদেশ থেকে যেতে পারেননি। সব প্রক্রিয়া শেষ করে বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়েও যেতে পারেননি প্রায় ১৭ হাজার বাংলাদেশি কর্মী। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কর্মসংস্থান অনুবিভাগ) নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত কমিটির শেষ কর্মদিবস ছিল আজ। সময় বাড়ানোর ফলে তারা ঈদের পর প্রতিবেদন জমা দেবে।