খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ এবং গোলাগুলিতে আহত মোট ২৪ জন দুই জেলার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ১৯ জন এবং খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি রয়েছেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে দুই জেলায় সংঘর্ষ এবং গোলাগুলিতে ৪ জন নিহত এবং মোট ৮০ জন আহত হন। খাগড়াছড়িতে নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)। রাঙামাটিতে নিহত ব্যক্তির নাম অনিক চাকমা (২৫)।
বৃহস্পতিবার সংঘর্ষে আহত ১৫ জনকে খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসাধীন।
খাগড়াছড়ি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, চিকিৎসাধীন পাঁচজনের অবস্থাই স্থিতিশীল। আহত ব্যক্তিদের একজনকে আজ ছাড়পত্র দেওয়া হবে। চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বাঙালি, অন্য চারজন পাহাড়ি।
রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শওকত আকবর জানান, গতকাল শুক্রবার ৩৮ জন ভর্তি হয়েছিলেন। ১৯ জন এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহত ব্যক্তিরা ভালো আছেন। চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন পাহাড়ি।
বুধবার খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্রে করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবককে হত্যা করার জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই দিন সেখানকার পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। বাঙালিদের অভিযোগ, মিছিলটি বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে বিভিন্ন দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, আগুনে দীঘিনালা বাসস্টেশন ও লারমা স্কয়ার এলাকায় ১০২টি দোকান পুড়ে গেছে। এর মধ্যে পাহাড়িদের ৭৮টি ও বাঙালির সম্প্রদায়ের ২৪টি দোকান রয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হন।