চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে স্কুলের মূল ফটকে ঢোকার সময় তৃতীয় শ্রেণির চার শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়েছে বালুবাহী একটি চাঁদের গাড়ি। ঘটনাস্থলে আইনুর তাসফি (৯) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হয় আরও তিন শিক্ষার্থী।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম সড়কের সুয়াবিল ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে গাড়িচালক পলাতক।
আইনুর তাসফি নাজিরহাট পৌরসভার মসজিদের ইমাম জাহেদুল ইসলামের মেয়ে। আহত শিক্ষার্থী মুনতাহা আকতার (৮), মায়শা মনি (৯) ও মেঘলা দেবী (৮) একই এলাকার বাসিন্দা। তারা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে একসঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল আইনুর, মুনতাহা, মায়শা ও মেঘলা। স্কুলের মূল ফটকের সামনে একটি বেপরোয়া চাঁদের গাড়ি তাদের গায়ের ওপর উঠে যায়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আইনুরকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরেফিন আজিম।
নিহত স্কুলছাত্রী আইনুরের আত্মীয় মুহাম্মদ আবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘চালকের বদলে সহকারী গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। স্থানীয় লোকজন গাড়িটি জব্দ করেছেন। আমরা এ ঘটনার শাস্তি চাই।’
নাজিরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ওসমান গণি প্রথম আলোকে বলেন, আর ১০০ ফুট গেলেই মেয়েরা স্কুলে ঢুকে যেতে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। গ্রামীণ সড়কে চাঁদের গাড়ি চলা এবং অবৈধ চাঁদের গাড়ি বন্ধ করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। পুলিশের কাছে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফন করতে আবেদন করেছে আইনুরের পরিবার। লাশ বুঝে পেলে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
এ বিষয়ে ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকে মামলা করতে রাজি হয়নি কেউ। চাঁদের গাড়িটি জব্দ করা অবস্থায় পুলিশি হেফাজতে আছে। চালক পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ফটিকছড়ি উপজেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের পাইন্দং ইউনিয়নের পেলাগাজী মোড়ে পুলিশের ধাওয়ায় পালানোর সময় দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে চাপা দিয়েছিল চাঁদের গাড়ি। এ সময় দুজনের মৃত্যু হয়।