পৃথক দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ চার দিন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন (সিএমএম) আদালত আজ শুক্রবার বিকেলে এই আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও মকবুল নামের বিএনপির এক কর্মীকে হত্যার মামলায় সাবেক সচিব হেলালুদ্দীনকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীনকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের খুলশী তুলাতুলী এলাকার একটি বাসা থেকে হেলালুদ্দীন আহমদকে আটক করে পুলিশ। তিনি ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ থেকে অবসরে যান। এর আগে তিনি ইসির সচিব ছিলেন। সর্বশেষ তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।
তিন দিনের রিমান্ডে মোস্তফা কামাল
নয়াপল্টনে যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে। তাঁকে আদালতে হাজির করে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের দিন সংঘর্ষে যুবদল নেতা শামীম মোল্লা নিহত হন। তাঁকে হত্যার অভিযোগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৭০৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে করা জরুরি।
আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে জামিন আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মোস্তফা কামাল উদ্দীনকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
মোস্তফা কামাল উদ্দীন ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায় পুলিশ।
আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন মামলায় আওয়ামী লীগ আমলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কিছু সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়াসচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।