জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ের শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ছিল আজ। এ জন্য সম্রাটকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে আদালতে আনা হয়।
সম্রাটের আইনজীবী অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনের বিরোধিতা করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহামুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত অভিযোগ গঠন বিষয়ের শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেন।
গত ২৪ মে এই মামলায় সম্রাট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করেন। তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
১৮ মে এই মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হাইকোর্ট তাঁকে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তার আগে গত ১১ মে এই মামলায় সম্রাট বিচারিক আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন। পরে সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। আগে সম্রাট তাঁর বিরুদ্ধে থাকা আরও তিনটি মামলায় জামিন পান।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তাঁর সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
তখন র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় আনার পর সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সম্রাটের কার্যালয়ে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
পরে সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে রমনা থানায় মামলা করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) আইনে মামলা করে। আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।