প্রায় সব মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা প্রস্তুত হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও প্রতিমা স্থাপনের কাজ শেষ। মণ্ডপ সাজানোর কাজও চলছে পুরোদমে। গতকাল সোমবার রাজধানীর চারটি পূজা মণ্ডপ ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
আয়োজকেরা বলছেন, সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে প্রতিমা ও মণ্ডপ সাজানোর কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে যথাসময়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী তাঁরা।
দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বোধন আজ মঙ্গলবার। বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করা হবে। আগামীকাল বুধবার ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে দোলায় বা পালকিতে এবং বিদায় ঘোটক বা ঘোড়ায়।
রাজধানীর গুলশান–বনানী সর্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন অন্যান্য বছরের মতো এবারও বনানীর মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পার্কে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছে। গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, মণ্ডপে প্রতিমা আনা হয়নি। মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে। কেউ কেউ কর্কশিটে নকশা আঁকছিলেন, কেউ আলোকসজ্জায় ব্যস্ত, দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন কেউ কেউ।
বিদ্যমান পরিস্থিতি ও আর্থিক সংকটের কারণে এবার শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান করা হলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে না বলে জানান গুলশান–বনানী সর্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার জোয়ারদার।
রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার উলন দাসপাড়ার শ্রীশ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরে প্রতিমা নরসিংদী থেকে কিনে আনা হয়েছে। গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা আনা হলেও তা তখনো স্থাপন করা হয়নি। ফটকে সাজসজ্জার কাজ চলছিল। এই পূজামণ্ডপ কমিটির উপদেষ্টা রঞ্জিত কুমার দাস জানান, একসময় এখানেই তাঁরা প্রতিমা তৈরি করতেন। কিন্তু হাতিরঝিল প্রকল্পের জন্য মন্দিরের জমি অধিগ্রহণ করার পর থেকে স্থানসংকটের কারণে তা আর সম্ভব হয় না।
রমনা কালীমন্দিরের প্রতিমাও প্রস্তুত হয়ে গেছে, তবে স্থাপন করা হয়নি। গতকাল সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, মণ্ডপে রং করছিলেন এক শিল্পী। শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রমের সভাপতি উৎপল সাহা প্রথম আলোকে বলেন, (সোমবার) রাতের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। আজ কিছু টুকটাক কাজ হয়তো থাকবে।
খামারবাড়ি দুর্গাপূজা মণ্ডপে প্রতিমা স্থাপন করা হয়ে গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় দেখা যায়, মণ্ডপ প্রস্তুতকরণ চলছে। পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের জন্য এ মণ্ডপের প্রতিমা আজ থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
পূজামণ্ডপগুলোয় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনো সেনাপ্রধান দুর্গাপূজার প্রস্তুতি দেখার জন্য মন্দিরে এসেছেন, যা থেকে বোঝা যায় যে পূজার নিরাপত্তার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।
সরকারি হিসাবে, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গতকাল সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজার নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন করতে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কেউ অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।