ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পেয়েছেন। গতকাল সোমবার তাঁকে এ পাস দেওয়া হয়েছে। এই ট্রাভেল পাসের শর্ত অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে তাঁকে দেশে ফিরতে হবে। আজ মঙ্গলবার ফোনে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান সালাহ উদ্দিন আহমদ।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে সালাহ উদ্দিন নিখোঁজ হন। ৬২ দিন পর ওই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। ভারতের পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সালাহ উদ্দিন শিলংয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করার সময় লোকজনের ফোন পেয়ে তাঁকে আটক করা হয়।
আজ সালাহ উদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) সকালে গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের অফিস থেকে ট্রাভেল পাসের বিষয়টি জানানো হয়। কাল রাতে এটি আমার হাতে পৌঁছায়।’
ট্রাভেল পাসের শর্ত অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে তাঁকে বাংলাদেশে ফিরতে হবে বলে জানান সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি কবে দেশে ফিরবেন জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দেশে ফেরার আগে তিনি ভারতেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিকিৎসকের কাছে যান না। কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর তিনি দেশে ফিরবেন।
এর আগে গত ৮ মে সালাহ উদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য ভারতের আসাম রাজ্যের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তাঁর বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাঁকে খালাস দিয়েছেন।
আবেদনে সালাহ উদ্দিন আরও উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান এবং দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান।
সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমদ সে সময় সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন, তাঁর স্বামীকে মেঘালয়ের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর পরিবার বিভিন্ন সময় দাবি করেছে, সালাহ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে আটকে রেখে একটা পর্যায়ে সীমান্তের ওপারে রেখে আসা হয়।
সালাহ উদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়। সেই মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহ উদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাঁকে সেখানেই থাকতে হয়। চলকি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহ উদ্দিন এবং আদালত তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন।