মুটিয়ে যাওয়া, মেদ বাড়া, ফাস্ট ফুড খাওয়া এবং কায়িক শ্রম কমে যাওয়ায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই এই রোগপ্রতিরোধে মনোযোগ দিতে হবে। তাই ৩০ বছর পার হতেই সতর্ক থাকতে হবে, পরীক্ষা করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করলে সুস্থ থাকা যায়।
আজ সোমবার রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তাদের বক্তব্যে এসব কথা ওঠে আসে।
আগামীকাল ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের কর্মসূচিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন’।
সংবাদ সম্মেলনে ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস বহুলাংশ প্রতিরোধযোগ্য। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। মুটিয়ে যাওয়া, মেদ বাড়া, ফাস্ট ফুড খাওয়া এবং কায়িক শ্রম কমে যাওয়ায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে।
অধ্যাপক এ কে আজাদ খান আরও বলেন, যাঁদের এসব ঝুঁকি রয়েছে, তাঁদের এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। বয়স বাড়লে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ৩০ বছর পার হতেই সতর্ক থাকতে হবে, পরীক্ষা করতে হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে।
ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছিল বিনা মূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার জন্য। সরকার তাতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে জানান সমিতির সভাপতি।
জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান আরও বলেন, নগরায়ণের ফলে মানুষের হাঁটাচলা কমে গেছে। ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার বাড়ছে। নগরায়ণ বন্ধ করা বা এসব খাবার থেকে মানুষকে দূরে রাখা যাবে না। কিন্তু মানুষকে সচেতন হতে হবে। শহরে হাঁটার পথ, পার্ক, মাঠ রাখতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্যাকেটে খাদ্য উপাদান ও পরিমাণের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে থাকতে হবে, যাতে মানুষ জেনেবুঝে খান। মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
শহরের চেয়ে গ্রামে প্রি-ডায়াবেটিস রোগী বেশি বলে জানালেন ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি। তিনি বলেন, সেখানে যখন নগরায়ণ হবে, তখন ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। এ জন্য নগরায়ণ করার সময় খোলা জায়গা রাখতে হবে। বর্তমানে চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, এমন কোনো ডায়াবেটিস নেই। কিন্তু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার নিয়ম না মানলে ওষুধ খেয়েও লাভ হবে না। তিনি বলেন, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে অনেকের উপসর্গ বোঝা যায় না, কিন্তু জটিলতা থেকেই যায়। বংশগত প্রভাব ও পারস্পরিক কারণে ডায়াবেটিস হয়।
ডায়াবেটিস সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, যেসব বাচ্চার ওজন জন্মের সময় আড়াই কেজির কম হয়, তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হয়। তাই গর্ভবতী নারীদের সঠিক খাদ্য দিতে হবে। এ জন্য পরিবারের অন্যদের ভূমিকার রয়েছে। তাহলেই সুস্থ-সবল বাচ্চার জন্ম হবে।
ডায়াবেটিস সমিতির প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ফরিদ কবিরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বারডেম একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক ফারুক পাঠান, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক এম এ রশীদ ও অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী।