চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে বন্ধ থাকা হলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম হায়াত উল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
হায়াতের সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থীদের মালামাল নিয়ে যেতে সময় বেঁধে নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনার আলোকে হায়াত হল থেকে মালামাল নিয়ে যেতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তবে সাড়ে নয়টার দিকে হায়াতকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তিনজন অপহরণ করেন। সহপাঠীরা জানান, ওই তিনজনও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে তাঁদের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁরা।
অপহরণের পর তাঁরা হায়াতকে শহীদ আবদুর রব হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা লাঠি দিয়ে হায়াতকে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে গিয়ে হায়াতকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক কর্মকর্তা সাইদা আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগীর শরীরে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। এ ছাড়া রক্তচাপও বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ কারণে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এক্স-রে ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলেছেন।
হায়াতের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছিলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শামসুল আলম। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান। হায়াতকে বিভিন্ন স্ক্রিনশট দেখিয়ে পেটানো হয়েছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল, তাদের হলের কর্মচারীরা চেনেন। আবার একজন সহকারী প্রক্টরও হামলাকারীদের দেখেছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলের প্রাধ্যক্ষ এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, সম্ভবত ছাত্রদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি ছিল। বিষয়টি তাঁরা প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছেন। বিস্তারিত জানার জন্য তিনি প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, সম্ভবত হল থেকে জিনিসপত্র নিতে গিয়ে কয়েকজন বন্ধুর মধ্যে কোনো বিষয়ে বিতণ্ডা থেকে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এমনটাই তিনি শুনেছেন। এই ঘটনাই যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবেন।