সরবরাহ কমে যাওয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও জ্বলছে না রান্নার চুলা, আবার কোথাও কোথাও আগুন থাকলেও তা মিটমিট। ফলে রান্না খাবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। সেই চাপ পড়ে পাড়া ও অলিগলির হোটেলগুলোতে। তবে রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস চলে এলেও চাপ অনেক কম।
সোমবার সকাল ১০টার পর নগরের অন্তত ২০টি এলাকায় গ্যাসের সংকট দেখা দেয় বলে জানা গেছে। নগরের পাঁচটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ১০টার পরপরই গ্যাস সরবরাহ প্রায় নাই হয়ে যায়। কোথাও একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। আবার অনেক জায়গায় গ্যাস থাকলেও চুলা জ্বলেছে মিটমিট করে।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) নগর, নয়টি উপজেলা ও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে গ্যাস সরবরাহ করে। গ্রাহক সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।
নগরের আসকার দিঘীর পাড়ের বাসিন্দা নয়ন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হোটেল থেকে এনে খাবার খেয়েছেন।
অনেক জায়গায় সন্ধ্যার পরে গ্যাস এলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। নগরের লাভ লেন আবেদিন কলোনির বাসিন্দা উম্মে সালমা প্রথম আলোকে বলেন, সকালের দিকে তাঁর বাসায় গ্যাস থাকলেও দুপুরের দিকে চলে যায়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফিরে আসে। তবে চাপ খুবই কম।
গ্যাস–সংকটের বিষয়ে কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় টার্মিনাল দুটি থেকে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। চট্টগ্রাম জেলায় ১৮ কোটি ঘনফুট চাহিদা থাকলেও পাওয়া গেছে ৯ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় চুলা জ্বলছে না। তবে রাতের মধ্যেই সংকট কেটে যাবে।
আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য টার্মিনাল দুটির একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি সামিট এলএনজি টার্মিনাল। এই দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে দিনে প্রায় ১১০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্রায় ছয় মাস ধরে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট করে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। আরপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত রোববার আবহাওয়া খারাপ ছিল। সাগর উত্তাল ছিল। এ কারণে সরবরাহ কিছুটা কমে যায়। তবে পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় আবারও ৬০ কোটি ঘনফুট করে সরবরাহ হচ্ছে।