চট্টগ্রাম নগরের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জিইসি র্যাম্প নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সহসভাপতি ও সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞ সুভাষ বড়ুয়া বলেন, নগরের বাওয়া স্কুল ও জিইসি মোড়ের মাঝখানে যে র্যাম্প নির্মাণের কাজ চলছে, জনস্বার্থে তা বন্ধ করা অপরিহার্য। কারণ, এ জায়গা এমনিতেই অত্যন্ত যানজটপ্রবণ। প্রতিদিন এখানে সকাল থেকেই রাত ৯-১০টা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। এখানে নতুন র্যাম্প করলে মূল সড়কের প্রশস্ততা কমে গিয়ে জিইসিতে যানজট বেড়ে যাবে। পাশাপাশি এম এম আলী সড়ক, ওয়াসা এবং লালখান বাজার মোড়ে যানজটের তীব্রতা বেড়ে যাবে। কারণ, এসব জংশনে নুতন করে ডান দিকে মোড় নেওয়া বেড়ে যাবে। যা যানজট ও দুর্ঘটনা বাড়াবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে লালখান বাজার থেকে ওঠার সমাধান প্রসঙ্গে বলা হয়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে কার্যকর করতে যে র্যাম্প টাইগারপাসে নামানো হয়েছে, সেটাকে ওঠার ও নামার র্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। এর ফলে যেসব গাড়ি লালখান বাজার, হোটেল র্যাডিসন ব্লু থেকে আসবে, তাদের ডান দিকে ঘুরতে হবে না।
এ ছাড়া যে র্যাম্প টাইগারপাসে নামানো হয়েছে, সেটাকে শুধু ওঠার র্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা এবং যে র্যাম্প আমবাগানের দিকে নামানো হয়েছে, তা নিয়ে লালখান বাজারমুখী গাড়িও নামতে পারবে। শুধু প্রয়োজন হবে একটা সুপরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থাপনা।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ জিইসি র্যাম্পের নির্মাণকাজ বন্ধ করছে না বলে অভিযোগ করেন প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, যার মধ্যে অন্যতম লালখান বাজার-পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। শুরু থেকেই বিতর্কিত এ প্রকল্পটি বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের মতামত এবং জনস্বার্থ উপেক্ষা করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থে বাস্তবায়ন করা হয়। পরিবর্তিত সময়ে এই এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প স্থাপন নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। সবশেষে বিতর্কিত বেশ কয়েকটি র্যাম্প প্রকল্প থেকে সাময়িক বাদ দেওয়া হলেও বাওয়া স্কুল ও জিইসি জংশনের মাঝখানে হোটেল পেনিনসুলার সামনে থেকে প্রস্তাবিত র্যাম্পটি বাদ দেওয়া হয়নি। অপরিকল্পিত ও ব্যক্তিস্বার্থে নেওয়া এই র্যাম্পের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক প্রতিবাদ করার পরও এর নির্মাণকাজ বন্ধ করা হয়নি। বরং অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুতগতিতে নির্মাণ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সিকান্দার খান, ফোরামের সদস্য তসলিমা মুনা।
উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ বি এম এ বাসেত, অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, স্থপতি আহমেদ জিন্নুর চৌধুরী, অধ্যাপক শফিক হায়দার চৌধুরী।