ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে দলীয় স্বার্থ হাসিল করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের সময় আমরা দেখেছি সড়কের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার। স্বৈরাচার পতনের পরও সেই একই চিত্র। এখনো দেয়ালে পোস্টার, শুধু ছবি পরিবর্তন হয়েছে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা তাঁদের বলতে চাই, ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে কোনো দলীয় স্বার্থ হাসিল করা যাবে না। আমরা আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। আমরা বুলেট–বোমা ভয় পাই না। দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। চাঁদাবাজি ও লুটপাট করার সুযোগ নেই। যাঁরা এসব করবেন, ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের রুখে দেবে।’
‘মতবিনিময় সভা ও গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী ভাবনা’ শিরোনামে এ সভার আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে চাঁদাবাজি ও লুটপাট যাঁরা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ ও সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ।
এর আগে বেলা তিনটা থেকে লালদীঘি ময়দানের আশপাশে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় লালদীঘি মঞ্চের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন তাঁরা। চাঁদাবাজি, লুটপাট ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল চারটার আগে মঞ্চের সামনে জড়ো হন পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখন রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সময়। এখন আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সমন্বয়ক হতে হয় না। আমরা সবাই সমন্বয়ক, সবাই সহসমন্বয়ক। আপনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করবেন৷ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এগিয়ে এসেছিলাম। রাষ্ট্র সংস্কারেও সেভাবে এগিয়ে আসব।’
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে না, তত দিন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দেখতে চাই। আমরা এমন স্বাস্থ্যসেবা চাই, যেখানে প্রেসিডেন্টেও চিকিৎসা নেবেন, একজন সাধারণ মানুষও চিকিৎসা নেবেন। এমন শিক্ষাব্যবস্থা চাই, সেখানে সবাই একসঙ্গে শিক্ষাগ্রহণ করবে।’
পুলিশকে কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ ছাত্র ভাই-ভাই। আপনারা কাজে ফিরে আসুন। ছাত্র-জনতা আপনাদের পাশে আছে। সবাই বেনজীর-হারুন না। জনতামুখী না হয়ে ক্ষমতামুখী হলে বেনজীর-হারুনের অবস্থা হবে। ছাত্রসমাজ পুলিশকে প্রতিপক্ষ না ভেবে তাদের সহযোগী ভাববেন। তাদের সহযোগিতা করবেন।’ সবশেষে শিক্ষার্থীরা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে শপথ নেন।