‘কোনো দিকে খাবার পানি (বিশুদ্ধ পানি) নেই। মুড়ি-চিড়া না, খাবার পানি এনেছ, তাতে বেশি খুশি হয়েছি।’ প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ হাতে পেয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথাগুলো বলছিলেন ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার পূর্ব সুয়াবিল ওয়ার্ডের পানাউল্লাহ পাড়ার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব বিবি নুর নাহার।
আজ রোববার প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ নিয়ে নাজিরহাট পৌরসভার টোনাকাজির বাড়ি, পানাউল্লাহ পাড়া ও নাছির মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ি এলাকায় ২২৬টি পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। ট্রাক থামার পর আরও প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে এই গ্রামে গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করে তাঁরা। ত্রাণ পেয়ে নিজেদের সন্তুষ্টির কথা জানান বাসিন্দারা।
হালদার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে ফটিকছড়ির বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে পানি কিছুটা নামলেও যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। টোনাকাজির বাড়ি, পানাউল্লাহ পাড়া ও নাছির মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ি এলাকাগুলো হালদার কাছাকাছি হওয়ায় পানি ছিল বেশি। পানি সরে গেলেও পুরো সড়কে ছিল কাদা।
চট্টগ্রাম বন্ধুসভার যুগ্ম সম্পাদক আল সাঈদ সোহেল বলেন, গ্রামের পুরো সড়কে হাঁটুসমান কাদা। ট্রাক থামার স্থান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে আসতে হয়েছে। এখানে এই ৩ এলাকার ২২৬ পরিবারকে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ত্রাণ পেয়ে গ্রামবাসী খুশি বলে জানান চট্টগ্রাম বন্ধুসভার অর্থ সম্পাদক আহমেদ রেজা আছাদ। তিনি বলেন, ‘বন্ধুসভার ৩০ জন বন্ধু মিলে মুড়ি, গুড়, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বিস্কুট, খাওয়ার স্যালাইন, কেক, নুডলস, দিয়াশলাই, জুসসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার প্যাকেট করেছি। ৯ বন্ধু মিলে আমরা ফটিকছড়িতে এগুলো পৌঁছে দিয়েছি।’
এর আগে গত শনিবার ফটিকছড়ি উপজেলার ১০ নম্বর সুন্দরপুর ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল। গত শনিবার সেখানকার প্রায় ৩৫০ বাসিন্দার জন্য রাতের খাবার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি ইব্রাহিম তানভীর। তিনি বলেন, ১১০টি পরিবারের ৩৫০ বাসিন্দার জন্য রাতের খাবারের আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপদেষ্টা শিহাব জিশান বলেন, হালদার পাশে হওয়ায় সড়কগুলো বেশি প্লাবিত হয়েছে। পানি সরে যাওয়ার পর হাঁটুসমান কাদা ছিল সড়কে। এখানকার মানুষজন শুকনো খাবারের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি পেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন।