সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এই ছবি গত ১৫ মার্চ প্রকাশ করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর এই ছবি গত ১৫ মার্চ প্রকাশ করেছিল ভারতীয় নৌবাহিনী

জিম্মি নাবিকদের ঈদ কাটল যেভাবে

সোমালিয়ায় আজ বুধবার ছিল ঈদের দিন। সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি অবস্থায় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর হ্যাচে (পণ্য রাখার খোলের ওপরের লোহার ঢাকনা) ঈদের নামাজ আদায় করেছেন নাবিকেরা। দস্যুদের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে ঈদের নামাজ আদায় করেন তাঁরা। নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী কয়েকটি সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জাহাজটি সোমালিয়ার দস্যুরা জিম্মি করেছিল গত ১২ মার্চ। এ হিসেবে নাবিকদের জিম্মিদশার ৩০তম দিন ছিল আজ। জিম্মি জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূলের দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।

একজন নাবিকের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দস্যুদের কড়া পাহারার মধ্যে ঈদের নামাজ আদায় করেন নাবিকেরা। পরে তাঁরা একটি ছবি তোলেন। ছবিতে দেখা যায়, নাবিকেরা জাহাজের হ্যাচের ওপর ত্রিপল বিছিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করছেন। জিম্মি ২৩ নাবিকের মধ্যে ২২ জনকে ছবিতে দেখা গেছে। জিম্মি অপর নাবিক ছবিটি তুলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ছবিতে দেখা যায়, নাবিকদের বেশির ভাগই পায়জামা–পাঞ্জাবি ও টুপি পরেছেন। উপকূলের দিক থেকে সাগরমুখী হয়ে ছবিটি তোলা হয়েছে। ছবিতে নাবিকদের পেছনে নীল সাগর দেখা যায়। হ্যাচের ওপর জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো–নামানোর কাজে ব্যবহৃত ক্রেনের বডি, হুক ও গ্র্যাব দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাহাজে পানির সংকট থাকায় সপ্তাহে দুই দিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। বিকেরা দুদিন পর আজ ঈদ উপলক্ষে গোসল করার সুযোগ পেয়েছেন। নামাজ শেষে সামান্য খাওয়াদাওয়া করেন তাঁরা।

ছবিটির বিষয়ে জাহাজের মালিকপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি। ছবিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবিকদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ছবিটি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের। জিম্মি নাবিকেরাও রয়েছেন তাতে। ছবি দেখে ধারণা করা যায়, দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এ জন্যই দস্যুরা নাবিকদের ঈদের নামাজ আদায়ের সুযোগ দিয়েছে। সমঝোতার বিষয়ে অগ্রগতি না হলে দস্যুরা ঈদের নামাজ আদায় করার সুযোগ দিত বলে মনে হয় না।

অপর একটি জাহাজে কর্মরত এক নাবিক প্রথম আলোকে জানান, নাবিকেরা জাহাজে যোগদানের সময় সঙ্গে করে জামা–কাপড় নিয়ে যান। কারণ, নাবিকদের অনেক সময়ই জাহাজে ঈদ পালন করতে হয়।