ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে দেশের ২০ জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা টাকার হিসাবে প্রায় ৬ হাজার ৮৮০ কোটি। যদিও হিসাবটি এখনো চূড়ান্ত নয়। চলতি সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় মিলে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করা হবে। এরপর ৯ জুন আন্তমন্ত্রণালয়ে সভা করে হিসাব চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া হবে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের বিষয়ে আজ রোববার সচিবালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। এ সময় তিনি রিমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তার তথ্যও তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ১৯ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের অনুকূলে ত্রাণকাজের জন্য নগদ ৫ কোটি ৭৫ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ টন চাল, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন, শিশুখাদ্য কেনার জন্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ও গোখাদ্য কেনার জন্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
গত রোববার রাতে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের ২৯ মের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে দেশের ৭ জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া উপকূল ও এর আশপাশের ১৯টি জেলায় প্রায় পৌনে ২ লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০ হাজার ৩৩৮টি ঘরবাড়ি। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৮টি ঘরবাড়ি। আর এই ঝড়ে দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাত ও অতিবৃষ্টিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের করা ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ৪৮ জেলার কৃষিতে রিমালের প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩টি জেলা। রিমালের আঘাতে ১ লাখ ৭১ হাজার ১০৯ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি-সংক্রান্ত সব বিষয় তাঁর মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থা তাদের আওতাধীন বিষয়ের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপ করবে। এরপর তারা পুনর্নির্মাণ, সংস্কার বা মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।