কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আজ বৃহস্পতিবার রোডমার্চের মধ্য দিয়ে এ পর্বের কর্মসূচি শেষ করছে বিএনপি। এরপর সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে শিগগিরই চূড়ান্ত পর্বের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজাসহ কিছু কৌশলগত কারণে এখনই দলগুলো কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছে না।
২০ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজার জন্য পাঁচ দিন বিএনপি কর্মসূচি থেকে বিরত থাকবে। পূজার পর চলতি অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। তার আগে বিক্ষোভ সমাবেশসহ গতানুগতিক কিছু কর্মসূচি থাকবে। তবে পূজার আগেই ঢাকায় আবার একটি মহাসমাবেশ করে সরকারকে পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
গত সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে কোন দিন কী কর্মসূচি হবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। আগামী কয়েক দিনে ঢাকায় ‘ছাত্র ও যুব কনভেনশন’ করার কথা রয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্বে সমমনা ১৫ ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ইতিমধ্যে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামের নতুন ছাত্রজোট গঠিত হয়েছে। একইভাবে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর যুব সংগঠনের সমন্বয়ে যুব জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পেশাজীবী, শ্রমিক কনভেনশন হয়েছে।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কার্যকর শুরুর পর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে মারাত্মক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে বলে বিএনপি মনে করছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফেরার পরের কয়েকটা দিন তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। তাদের আশঙ্কা, এখনই কঠোর কর্মসূচি শুরু করলে সরকারি মহল থেকে দুর্গাপূজাকে লক্ষ্য করে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটিয়ে দায় চাপানো হতে পারে। সে জন্য অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে চূড়ান্ত আন্দোলন-কর্মসূচির যে পরিকল্পনা ছিল, তাতে কৌশলগত কারণে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলন হবে ঢাকাকেন্দ্রিক। এ মাসের শেষ সপ্তাহে রাজধানীমুখী রোডমার্চ করার আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি আসতে পারে। প্রয়োজনে ঢাকার প্রবেশমুখে আবারও অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতে পারে দলটি।
সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে আজ কুমিল্লা থেকে রোডমার্চ হবে। এটি সকাল ৯টায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়ায় খন্দকার ফুড গ্যালারির সামনে থেকে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। এরপর রোডমার্চ ফেনী-মিরসরাই-সীতাকুণ্ড হয়ে বিকেলে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে। পথে কয়েকটি পথসভা শেষে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি গিয়ে রোডমার্চের সমাপ্তি সমাবেশ হবে। এই কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।