হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। রাজনীতির কারণে ঐতিহ্যবাহী এ হাসপাতালের সেবার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মূলত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র আধিপত্য এর জন্য দায়ী।
আজ রোববার এক গবেষণা প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ‘হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক টিআইবির গবেষণাটি ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। গবেষণাটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক তাসলিমা আক্তার ও মাহফুজুল হক।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২৮ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকে গড়ে ৩০০ জন। শয্যা খালি থাকার কারণে হাসপাতালের আয় কমছে। অন্যদিকে হাসপাতাল পরিচালনার জন্য যে জনবল প্রয়োজন, তার চেয়ে তিন গুণ বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
টিআইবির গবেষণা বলছে, হিসাব করে দেখা গেছে, হাসপাতালটির ২০৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোনো কাজই নেই।
গবেষকেরা বলছেন, এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যক্তিগত পরিচয়ের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। নিয়োগের সময় এই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা যাচাই করা হয়নি। এর প্রভার পড়ে সেবার ওপরে। এখানকার রোগীরা সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট। গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
কেনাকাটায় অনিয়ম, পদোন্নতিতে অনিয়ম—এ রকম নানা ধরনের অনিয়মের তথ্য পেয়েছে টিআইবি।
টিআইবি মনে করে, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র ক্ষমতা ও আধিপত্যের কারণে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠান এমন দুর্বল অবস্থায় চলে গেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হাসপাতালটি পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে সুশাসনের ঘাটতি আছে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক, উদ্বেগজনক।
গবেষণায় কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সোসাইটির চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র আধিপত্য কমানো, জনবলের একটি কাঠামো তৈরি করা, প্রতিষ্ঠানটিকে রাজনীতিমুক্ত করা, ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা।