মোবাইল অপারেটরদের সেবা প্রদানের জন্য এবার একীভূত লাইসেন্স দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর ফলে আলাদা আলাদা প্রযুক্তির জন্য ভিন্ন ভিন্ন লাইসেন্সের দরকার হবে না।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসির ভবনে তিন অপারেটরকে এ লাইসেন্স হস্তান্তর করা হয়। অপারেটরগুলো হলো গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা ও টেলিটক। এই লাইসেন্সের আওতায় ফাইভ–জিসহ সব ধরনের ওয়্যারলেস মোবাইল সেবা দিতে পারবে অপারেটররা।
বিটিআরসি জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ‘রেগুলেটরি অ্যান্ড লাইসেন্সিং গাইডলাইনস ফর সেলুলার মোবাইল সার্ভিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গাইডলাইন অনুমোদন হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা ও টেলিটককে এ লাইসেন্স দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, আগের টু–জি, থ্রি–জি, ফোর–জি এবং তরঙ্গ ফি–এর জন্য আলাদা লাইসেন্স এবং নির্দেশিকার পরিবর্তে সব বিষয়কে এক লাইসেন্সের আওতায় আনা হয়েছে। এ গাইডলাইনে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিকেও যেন গ্রহণ করা যায়, সেভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটি ফাইভ–জির ক্ষেত্রেও কাজ করবে। এর আওতায় ফাইভ–জি সেবা চালুর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হবে।
প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই সময়ে পরিবর্তন খুব দ্রুত হচ্ছে। তাই যেকোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দ্রুত ও সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, এ লাইসেন্সের মাধ্যমে অপারেটররা তাদের বিনিয়োগের সুফল পাবে এবং সরকারের রাজস্বও বাড়বে। তিনি বলেন, ইন্টারনেট কল বাড়ছে। অপারেটররা যেন বিদেশনির্ভর না হয়ে, দেশি কিছু সমাধান তৈরি করে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফাইভ–জি প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অপারেটরদের অনুকূলে তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার একীভূত লাইসেন্স প্রদানের ফলে ফাইভ–জিসহ নতুন প্রযুক্তিগত সেবা প্রদানে জটিলতা থাকবে না।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান, রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল আলম এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম হাবিবুর রহমান একীভূত লাইসেন্সের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
আজ তিন অপারেটর লাইসেন্স গ্রহণ করলেও বাংলালিংক লাইসেন্স গ্রহণ করেনি। বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, বাংলালিংকও খুব শিগগির লাইসেন্স গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে বাংলালিংকের করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান তাইমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ লাইসেন্সের জন্য বাংলালিংকের কিছু করপোরেট নীতির ব্যাপার রয়েছে, যা পূরণে কিছুটা সময় লাগছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ, অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের কমিশনার মুশফিক মান্নান চৌধুরী, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার মো. আমিনুল হক, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুণ্ডুসহ বিটিআরসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধি এমটবের মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার।