৭ দিনের মধ্যে মেট্রোরেল চালু হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ রোববার সকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা এ সময় বলেন, ‘এটার (চালু করতে) দুটো সমস্যা ছিল। একটা সমস্যা ছিল যে বোর্ডের সদস্য ছিল না। সেটা আমরা আজই করে ফেলেছি। ওই বোর্ডের একটা সভা হবে আগামীকাল সোমবার। সভার পর লাইনগুলো চেক করতে দুই-চার দিন লাগবে। আমাদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাহেব আছেন, তিনি আমাদের সময় দিয়েছেন; এটা সাত দিনের মধ্যে চালু করার চেষ্টা করবেন। আমরা সেখানে যাব, আপনাদেরও সেখানে আমন্ত্রণ জানাব।’
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ১১ আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে ১৭ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চালু হবে। সেদিন বলা হয়েছিল যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে। তবে মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে আপাতত ট্রেন থামবে না। কারণ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এ দুটি স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ১৭ আগস্ট মেট্রোরেল চালু হয়নি।
মেট্রোরেল চালানো, টিকিট বিক্রি, রক্ষণাবেক্ষণসহ সব দায়িত্ব নিচের দিকের স্থায়ী কর্মীদের। তাঁরা ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারী। তাঁদের সংখ্যা সাত শতাধিক। ৮ আগস্ট থেকে তাঁরা বৈষম্য দূর করতে ছয় দফা দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। ২০১৯ সালে এই কর্মচারী নিয়োগ শুরু হয়। এখন কারিগরি সমস্যা নেই। কর্মবিরতির কারণেই মেট্রোরেল চালু করা যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এই কোম্পানি ১০ সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড বা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সরকার পরিবর্তনের পর বোর্ডের অনেক সদস্যের চাকরি নেই। আর কর্মীদের বৈষম্য দূর করতে হলে বোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গতকাল শনিবার সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব নিয়োগ হওয়ার ফলে বোর্ডের বৈঠক করার ক্ষেত্রে বাধা কেটে গেল।
সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে নাগরিক হিসেবে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, সব ক্ষেত্রে সবাইকে সমান সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। ছাত্রদের এ রক্তের ঋণ আমাদের পরিশোধ করতে হবে। মন্ত্রণালয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণায় পরিবর্তন আনতে হবে। আর এ জন্য দুর্নীতি রোধ করতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, এ সরকার বানের জলে ভেসে আসা সরকার নয়। তারা যেকোনো ধরনের জনকল্যাণমূলক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না। এ সময় গুণগত মান বজায় রেখে সব কাজে ব্যয় সংকোচনের পরামর্শ দেন এই উপদেষ্টা। দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা তিনি।
মতবিনিময় সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. এহছানুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।