সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল আজ বৃহস্পতিবার। কিন্তু র্যাবের পক্ষ থেকে আজও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। আদালত ৭ আগস্ট এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন এই তারিখ ঠিক করেন। আদালতের নথিপত্রের তথ্য অনুযায়ী, এ নিয়ে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আদালত ৯৯ বার সময় দিলেন। আগামী ৭ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রাখা হয়েছে। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। মেহেরুন রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হওয়ার দিন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন (প্রয়াত) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে। খুনের দুই দিন পর পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহামুদ খন্দকারও বলেছিলেন, তদন্তের ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। এখন ১১ বছরের মাথায় তদন্ত সংস্থা র্যাব বলছে, যত দ্রুত সম্ভব আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
আদালতে জমা দেওয়া র্যাবের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুরুষকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবে ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ছবি প্রস্তুতের চেষ্টা চলছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএ ল্যাবের ফলাফল জেনেছে র্যাব। তবে অজ্ঞাতপরিচয় দুজনের ডিএনএ থেকে ছবি তৈরির সন্তোষজনক ফল আসেনি।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, মামলায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে দুজন জামিনে আছেন। বাকি ছয়জন কারাগারে। এখন পর্যন্ত ছয় কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত করেছেন। এর মধ্যে র্যাবের চার কর্মকর্তা রয়েছেন।