ধান-নদী-খাল...

ধান-নদী-খাল—এই তিনে বরিশাল। বরিশাল জেলা অঞ্চলের পরিচিতিতে বাক্যটি ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু বরিশাল জেলা নয়, এর আশপাশের জেলাগুলোর ক্ষেত্রেও বাক্যটি ব্যবহার করলে অত্যুক্তি হবে না। যেমন পিরোজপুর অঞ্চল। এই অঞ্চলের নানা দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নদী, খাল। দিনে-রাতে এসব নদী-খালে চলে জোয়ারভাটার অপূর্ব খেলা। আর ধানের মৌসুমে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। কবির ভাষায়, কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়। প্রতিদিন এখানে প্রকৃতি রূপ বদলায়। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিয়ে আসে। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহের তেমন কিছু দৃশ্যে ধরা পড়েছে প্রথম আলোর হেড অব কালচার অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট মাসুম অপুর ক্যামেরায়।

‘ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি…’ এমন দৃশ্য দেখে হয়তো আপনারও মনে পড়বে জাতীয় সংগীতের এই চরণ
যত দূর দৃষ্টি যায়, সবুজ ধানের খেত। পিরোজপুরের ইকড়ি ইউনিয়নে ধানের জমি। স্থানীয় ভাষায় এটাকে ‘কোলা’ বলে
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানালেন, মাস দেড়েক পর তাঁরা ধান কাটা শুরু করবেন। সে উৎসব চলবে জানুয়ারি পর্যন্ত
ধরণি ভরে গেছে ধানগাছে! এই জমিগুলোতে এবার ফলন বেশ ভালো হয়েছে
শিশিরভেজা হেমন্তের সকাল। ছবিটি রোববার ইকড়ি ইউনিয়নের আজিজ হাওলাদের বাড়ির পাশে ধান খেত এ তোলা
ভান্ডারিয়ার ৪ নম্বর ইকড়ি ইউনিয়নের আজিজ হাওলাদের বাড়ির পাশে ধান খেত দেখতে এসেছে দুই শিশু সাদিয়া আর মণি
পিরোজপুরের বেশির ভাগ বাড়ির পাশেই খাল রয়েছে। বাড়ির নানা পাশে সেসব খালের উপশাখা
সাঁকোকে স্থানীয় ব্যক্তিরা ‘চার’ বলেন। নিয়মিত যাঁরা গ্রামে থাকেন, তাঁরা অবলীলায় চার পার হতে পারলেও শহর থেকে যাওয়া আত্মীয়স্বজনের কাছে এটি পার হওয়া রীতিমতো ভয়ের
ভাগনেকে নিয়ে বাড়িতে এসেছেন কলেজ শিক্ষক আনসার উদ্দিন। সাঁকো পেরিয়ে চিকিৎসক ওয়াহিদুল শাহিন বহু বছর পর মামাবাড়িতে ঢুকছেন।
প্রায় সব বাড়িতে নিজস্ব নৌকা থাকে। যাঁরা সাঁকো পার হতে পারেন না, তাঁরা নৌকা ব্যবহার করেন। মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্যও নৌকা ব্যবহার করা হয়
ভান্ডারিয়ার তেলিখালী ইউনিয়নের পাশে কচা নদী। তেলিখালীর মানুষের কাছে এই নদী সর্বনাশা। অনেকেরই বাড়িঘর এখন নদীগর্ভে
কচা নদীর গর্ভে হারিয়ে গেছে বাপ-দাদার ভিটেমাটি। দুই ভাই-বোন দেখতে এসেছিলেন
নদীভাঙন থেকে রক্ষার জন্য বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। ভান্ডারিয়ার হরিণপালায় করা হয়েছে রিভারভিউ ইকোপার্ক। প্রতিদিন সেখানে দেখতে আসেন নানা বয়সী মানুষ। স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও দল বেঁধে ঘুরতে আসেন