কর্মস্থলে এক নারী সহকর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক পরিচালককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর নাম শেখ শাহীনুল ইসলাম। গতকাল রোববার ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। আজ সোমবার তাঁর নামে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মকর্তা গতকাল সকালে রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ দেন। তাতে বলা হয়, সেদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজউকের পরিচালক (জোন-৭) শেখ শাহীনুল ইসলাম ‘অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অশালীনভাবে’ তাঁর শরীর স্পর্শ করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি হতভম্ব হয়ে যান। তিনি রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ঘটনার বিচার চান।
রাজউকের এক অফিস আদেশে বলা হয়, শাহীনুল ইসলামের কর্মকাণ্ড ‘গুরুতর চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থী’। রাজউক (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০১৩-এর বিধি ৩৭(খ) অনুযায়ী তা অসদাচরণের শামিল। অপরাধের ধরন ও ভয়াবহতা বিবেচনায় তাঁকে রাজউক চাকরি বিধিমালার বিধি ৪৩-এর উপবিধি (১) অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরের পাশে রাজউকের অঞ্চল ৭-এর একটি অফিস রয়েছে। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ওই নারী কর্মকর্তা অফিসে আসেন। এরপরই ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। তবে এ বিষয়ে শাহীনুল ইসলামের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
পরে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী শাহীনুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর নামে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তিনি যদি নির্দোষ হন, চাকরি ফিরে পাবেন। আর অপরাধী প্রমাণিত হলে চাকরি হারাবেন।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ পাওয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এক ব্যক্তিকে পেটানোর অভিযোগও আছে। গণমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস দেখাননি। তাই নানা অপকর্ম করেও এই কর্মকর্তার কিছু হয়নি, পার পেয়ে গেছেন। সরকার পরিবর্তনের পর এবার শ্লীলতাহানির অভিযোগে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।