প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে পর্যটকেরা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে এসে ফেলে যান নানা রকমের ময়লা-আর্বজনাসহ প্লাস্টিক বর্জ্য। সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্যও। অপচনশীল এসব প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে হুমকিতে পড়েছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ। এ জন্য মৌসুম শুরুর আগেই সেন্ট মার্টিন সমুদ্রসৈকত আর লোকালয়ের যত্রতত্র পড়ে থাকা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে নিয়ে গত সপ্তাহে টানা তিন দিন সেন্ট মার্টিনের প্রতিটি অলিগলি ও সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে কাচের বোতল, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট, আচারের প্যাকেট, পলিথিন, ক্যান, চায়ের কাপ, স্ট্র, বিস্কুটের প্যাকেটসহ বিভিন্ন অপচনশীল বর্জ্য (ময়লা-আবর্জনা) সংগ্রহ করেন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা। এ কাজে প্রতিদিন ৫০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেন।
তিন দিনের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবীরা সেন্ট মার্টিন থেকে ৬ হাজার ৬৩৪ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করেন। এরপর ২০৫টি বস্তায় ভর্তি করে এসব বর্জ্য ট্রলারে করে টেকনাফে নেওয়া হয়। বর্জ্যগুলো ইউনিলিভার বাংলাদেশের চট্টগ্রামের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা-ইপসাকে দেওয়া হয়।
কেওক্রাডং বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন বলেন, সামুদ্রিক আবর্জনা বা মেরিন ডেবরিজ বর্তমান দুনিয়াতে বহুল আলোচিত। এর মূল কারণ, সামুদ্রিক আবর্জনা থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বা মাইক্রোফাইবারের মতো ক্ষতিকর কণা পরিবেশের সঙ্গে মিশছে। এসব কণার উপস্থিতি মানবদেহে, রক্তে, মলে এমনকি মাতৃদুগ্ধেও পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ভৌগোলিক কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের অন্তিম গন্তব্য হয় জলাধার। সেন্ট মার্টিনের মতো ছোট দ্বীপে পড়ে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখণ্ডে আনা না হয় তবে এর পরিণাম শুধু এই দ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ছড়িয়ে পড়বে বঙ্গোপসাগরে।