জনপ্রশাসনের উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা বাতিল এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশের প্রতিবাদে এবার মানববন্ধন করেছেন প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ‘আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’–এর ডাকে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিজেদের দপ্তরের সামনে এই মানববন্ধন করেন তাঁরা।
পদ ও পদোন্নতির দাবি নিয়ে জনপ্রশাসনে এখন দুটি পক্ষ মাঠে নেমেছে। তাদের মধ্যে এক দিকে আছে প্রশাসন ক্যাডার, অন্যদিকে আছে ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। মূলত ১৭ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ আলোচনায় আসার পর থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই ২৬টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাঁদের দাবি নিয়ে এক-দুই দিন ব্যবধানে নিয়মিত সভা, জমায়েত, কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার প্রশাসন ক্যাডারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘জনপ্রশাসনের সংস্কারকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করে দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ যৌথ প্রতিবাদ সভা করেছেন। তাঁরা সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশকে বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক, ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। পাশাপাশি সহকারী কমিশনার (শুরুর পদ) থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।
এর এক দিন পর আজ মানববন্ধন করলেন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদভুক্ত কর্মকর্তারা। পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়, কয়েক দিন আগে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ করা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে আলাদা করার সুপারিশ করে। আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিষদসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিজ নিজ ক্যাডারের কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালনার দাবি করছে। ইতিমধ্যে ২৪ ডিসেম্বর এক ঘণ্টার ‘কলমবিরতি’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। জবাবদিহিমূলক জনবান্ধব বেসামরিক প্রশাসনের দাবিতে পরিষদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
মানববন্ধনের সময় কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। বিগত সময়ের দুর্নীতির নথি গায়েবের জন্য এটি কোনো ষড়যন্ত্র কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন তাঁরা। আগুন নেভানোর সময় ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মী নিহতের ঘটনায়ও গভীর শোক প্রকাশ করেন তাঁরা।