ঢাকায় পৌঁছেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। আজ রোববার রাতে তিনি বাংলাদেশে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
রাত ৮টা ১০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ফরাসি প্রেসিডেন্টকে বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন এবং ২১ বার তোপধ্বনি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা ও মাখোঁ দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ ঢাকায় পৌঁছেছেন।
১৯৯০ সালে তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁর বাংলাদেশ সফরের পর এটি বাংলাদেশে কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় সফর। আগামীকাল সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এমানুয়েল মাখোঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও একান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরে তাঁরা যৌথ প্রেস ব্রিফিং করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের হওয়ার আগে মাখোঁ সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করবেন। আজ রাতে তাঁর সম্মানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক ভোজসভায় যোগ দেওয়ার কথা।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আগামীকাল সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছেন।
১৯৯০ সালের শুরু থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে বর্তমানে ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে ফ্রান্স পঞ্চম দেশ। ফরাসি কোম্পানিগুলো এখন ইঞ্জিনিয়ারিং, জ্বালানি, অ্যারোস্পেস ও পানি সম্পদসহ বিভিন্ন খাতে সম্পৃক্ত।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্স আশা করছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই সফর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর আমন্ত্রণে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হবে।
আগামীকাল বিকেলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।