চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যায় জড়িত আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আজ বুধবার বিকেলে আয়োজিত এক শোকসভায় আইনজীবীরা এ দাবি জানান। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অবিলম্বে সাইফুল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাঁদের ফাঁসি দিতে হবে। এ মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা ঘরে ফিরে যাবে না।
নাজিম উদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, ঘটনার দিন আদালত ভবনে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের কক্ষ ভাঙচুর, গাড়ি ও দোকানপাটে হামলা–লুটপাট চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী, বিশেষ করে সাইফুল হত্যাকারীদের পক্ষে না লড়তে অনুরোধ করেন সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী।
গত ২৬ নভেম্বর আদালতে দায়িত্ব পালনরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ক্রিয় থাকার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছে দাবি জানান জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করার কারণে ন্যক্কারজনক এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে পুলিশের দাবি, তারা ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। কোনো অবহেলা ছিল না।
সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও পাঠাগার সম্পাদক আহমেদ কবিরের সঞ্চালনায় শোকসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালেহ উদ্দিন হায়দার সিদ্দিকী, আবদুস সাত্তার, তারিক আহমেদ, ফৌজুল আমিন, সাজ্জাদুর রহমান, ফজলুল হক, ফখরুদ্দীন চৌধুরী, নাছিমা আক্তার প্রমুখ। সভা শেষে আইনজীবী সাইফুলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন কোর্ট হিল জামে মসজিদের ইমাম গোলামুর রহমান।
এদিকে আদালত ভবনে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় আজ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুস সাত্তারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বাকি চার সদস্যের নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন।