ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ২০১০ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ এর সুফল পায়নি। বরং এ ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
২০১০ সাল থেকে টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এর মধ্যে আইসিটি বিভাগ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। এরপরও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সর্বশেষ তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ১০০-এর মধ্যে ৬২। সূচকে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম ও ভুটানও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে।
সভায় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক আরও কিছু সূচকে বাংলাদেশের চিত্র তুলে ধরেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, ইন্টারনেটের গতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিজিটাল জীবনমান, ই-গভর্নমেন্ট, ই-সিকিউরিটি ও ফ্রিল্যান্সিংয়ে সমপর্যায় বা পিছিয়ে থাকা অর্থনীতির দেশগুলোর চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এসব সূচক দেখলে বোঝা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণ পাননি। বরং এ ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রায় সব জায়গায় দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হয় না। এক-দুবার সময় বাড়ানোর পর আবারও সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হয়। তাই এখন যে কয়েকটি প্রকল্পের সময় বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, তা যেন বুঝেশুনে বাড়ানো হয়। প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে শেষ করতে পারলে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ খাতে অনেক অগ্রগতি হবে এবং মানুষ সুফল পাবে। প্রকল্পের ব্যয় কমানো, দীর্ঘসূত্রতা পরিহার এবং প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
সভায় জানানো হয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের চারটি দপ্তরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৯টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) পাঁচটি, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি, ডাক অধিদপ্তর দুটি এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল পিএলসি একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
সার্বিকভাবে প্রকল্প পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দুই মাসে (আগস্ট পর্যন্ত) জাতীয় অগ্রগতি ১ শতাংশের বেশি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অগ্রগতি ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।