অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন

পুলিশ চলবে কমিশনের অধীনে, প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়া ঠিক হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে এই অস্ত্র দেওয়া ঠিক হয়নি।

আজ রোববার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ বাহিনীকে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো এভাবে ব্যবহার করা যাবে না।

পুলিশ চলবে পুলিশ কমিশনের অধীনে। এই পুলিশ জনগণের পুলিশ।

সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তাতে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। পুলিশকে তারা ব্যবহার করেছে, আপনারা তাদের ধরুন। আমি চেষ্টা করব হুকুমদাতাদের ধরতে। কারা পুলিশকে এভাবে ব্যবহার করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী—এটাও খুঁজে দেখতে হবে।’

গণমাধ্যমের উদ্দেশে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গণমাধ্যমে সত্যি ঘটনা তুলে ধরা হলে পুলিশের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা অন্তত হতো না।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দেশে পুলিশের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিভিন্ন থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৪ জন পুলিশ সদস্য।

৮ আগস্ট থেকে পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপির (ঢাকা মহানগর পুলিশ) কার্যালয় খোলা হয়। তবে সেখানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার পর্যন্ত দেশের ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৫৩৮টির কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ থানায় সীমিত পরিসরে কাজ চলছে। অনেক সদস্য এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে পুলিশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও বেপরোয়াভাবে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে যান পুলিশের অধিকাংশ কর্মকর্তা ও সদস্য।

পুলিশের কার্যক্রম কবে স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি।

তবে তিনি বলেছেন, পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগদানের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। সেই তারিখের মধ্যে যোগ না দিলে প্রশাসন তাদের মতো করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও কোনো পুলিশ সদস্য নেই। শিক্ষার্থীরা সড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন।

ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম কবে চালু হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পাশে থাকা পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ট্রাফিক পুলিশ প্রস্তুত আছে। অল্পসংখ্যক পুলিশ সদস্য আজ থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।