রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে শুক্রবার ‘বিচারহীনতার ১২ বছর, তাজরীনে শ্রমিক হত্যা: আগুন ও প্রাণের গল্প’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়
রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে শুক্রবার ‘বিচারহীনতার ১২ বছর, তাজরীনে শ্রমিক হত্যা: আগুন ও প্রাণের গল্প’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়

‘তাজরীনে শ্রমিক হত্যা: আগুন ও প্রাণের গল্প’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

ঢাকার আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১২ বছর পূর্তি হচ্ছে ২৪ নভেম্বর। দিনটি সামনে রেখে ‘বিচারহীনতার ১২ বছর, তাজরীনে শ্রমিক হত্যা: আগুন ও প্রাণের গল্প’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে এক অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক শাহ আলমের মা সাহারা খাতুন এবং নিহত শ্রমিক হেনা আক্তারের মা রোকেয়া খাতুন।

তাজরীনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিচারহীনতার প্রতিবাদে গত ১২ বছরে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, কফিল আহমেদ, ফারুক ওয়াসিফ, অরূপ রাহী, উদিসা ইসলাম, সাখাওয়াত টিপু প্রমুখের লেখা কবিতা, গান, নিবন্ধ ও নাটক সংকলিত হয়েছে গ্রন্থটিতে।

গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনের পর আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, লেখক কল্লোল মোস্তফা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার।

আলোচনায় বক্তারা তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ দোষীদের যথাযথ বিচারের আওতায় আনা, ক্ষতিপূরণ আইনে যথাযথ পরিবর্তন ও সংশোধন এবং তাজরীনের ঘটনায় আহত শ্রমিকদের কার্যকর পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত বাস্তবতায় শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখনো ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কাজের পরিবেশের মতো দাবিদাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে শ্রমিকদের নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে।

শ্রমিকদের ন্যায্য সংগ্রামে সংহতি জানিয়ে এগিয়ে আসার জন্য সব শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। শ্রমিক অধিকার প্রশ্নে রাষ্ট্র ও কারখানামালিকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের যথাযথ জবাবদিহি কাঠামোতে আনতে পারলেই কেবল প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলেও মত দেন তাঁরা।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।