ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্তে তথ্যানুসন্ধান কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
এ ছাড়া তিন বছর আগের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হওয়া তদন্তের প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও শাস্তি নির্ধারণে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সিন্ডিকেটের দুজন সদস্য প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে যাঁর বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান কমিটি হয়েছে, তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক। আর যাঁর বিরুদ্ধে হওয়া তদন্তের প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে, তিনি শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন একই ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী। এ বিষয়ে তিনি উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের কাছে বিচার চেয়ে আবেদনও দেন।
শিক্ষকের বিচার চেয়ে গত বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা উপাচার্যকে একটি স্মারকলিপি দেন। এরপর গতকাল সিন্ডিকেট তথ্যানুসন্ধান কমিটি করল। এর আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল।
সিন্ডিকেটের দুই সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে যে তথ্যানুসন্ধান কমিটি করা হয়েছে, তার প্রধান আইন অনুষদের ডিন সীমা জামান। কমিটির সদস্য সিন্ডিকেট সদস্য এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। এ বিষয়ে ওই শিক্ষার্থী তৎকালীন উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। পরে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তৎকালীন ডিন সাদেকা হালিমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।
তদন্ত শেষে কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের কাছে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গত অক্টোবরে পরবর্তী তিন বছর ওই শিক্ষকের পদোন্নতি বন্ধ রাখার সুপারিশ করে। এবার প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই ও শাস্তি নির্ধারণে ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হলো।
সিন্ডিকেটের দুই সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এরপর সিন্ডিকেট এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।