সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হট্টগোল ও মারামারির মামলায় নাহিদ সুলতানা যুথীসহ চার আইনজীবী আট সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। তাঁদের করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ জামিন দেন।
নাহিদ সুলতানা ছাড়া অপর তিন আইনজীবী হলেন জাকির হোসেন মাসুদ, শাকিলা রওশন ও মৌসুমী চৌধুরী ফাতেমা। চার আইনজীবী আজ আদালতে হাজির হন। তাঁদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান ও এস এম আবুল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।
সমিতির এবারের নির্বাচনে ভোট গণনা নিয়ে মারধরের ওই ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩০ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৮ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ থানায় ওই মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফ। মামলায় তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন এই সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল। সেখানে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথীকে প্রধান আসামি করা হয়। যুথী সমিতির নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামসের (পরশ) স্ত্রী। মামলায় মো. রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) দ্বিতীয় আসামি করা হয়, যিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল প্যানেল) থেকে সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রুহুল কুদ্দুসসহ দুজনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন
ওই মামলায় মো. রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। রিমান্ড শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওসমান চৌধুরী জামিন চেয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টে পৃথক বেঞ্চে পৃথক আবেদন করেন। বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রুহুল কুদ্দুসের জামিন আবেদনের ওপর আজ শুনানি হয়। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওসমান চৌধুরীর জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রুহুল কুদ্দুসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল, মাকসুদ উল্লাহ ও মো. আকতার রসুল মুরাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াসমীন বেগম বিথী।
পরে আইনজীবী আকতার রসুল মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, রুহুল কুদ্দুসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। জামিন মঞ্জুর হওয়ায় তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।
এদিকে ওসমান চৌধুরীর জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবিদ চৌধুরী। পরে আবিদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় ওসমান চৌধুরীর জামিন প্রশ্নে রুল দিয়ে হাইকোর্ট তাঁকে তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। ফলে তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।
আরেক আইনজীবীর ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন
ওই মামলায় বিএনপিপন্থী আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী ওরফে সোহাগ আগাম জামিন পেয়েছেন। আগাম জামিন চেয়ে তাঁর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন চান সোহাগ। তাঁর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম ও মো. আকতার রসুল মুরাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান।
হাইকোর্ট সোহাগকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী আকতার রসুল মুরাদ।