বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসসহ তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুই পক্ষ কোনো কথা বলেনি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এই সাক্ষাতের বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা অনেক কিছুই জিজ্ঞাসা করেছে। তারা জিজ্ঞাসা করেছে, আর কত দিনের মধ্যে এই অবস্থা স্বাভাবিক হবে, কারফিউ...। আমরা বলেছি, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। আমরা মনে করছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কারফিউ তুলে দিতে পারব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘তারা (জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা) নিহত দু-একজন কিশোরের কথা জানতে চেয়েছিল। আমরা একটা কিশোরের কথা বললাম, ওর বয়স কত, এখনো তার সার্টিফিকেটটি পাইনি। স্কুল থেকে জানাচ্ছে সাড়ে ১৭ বছর। কিন্তু সেই ছেলেটি যে অন্যায় কাজটি করেছে, এটা একটা জঘন্য অন্যায় কাজ করেছে। সে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। ভিডিও এবং অন্যান্য কথোপকথন থেকে আমরা তাকে শনাক্ত করতে পেরেছি। সে তো পুলিশ হত্যা করছেই এবং ঝুলিয়ে রাখার জন্য দড়ি ধরে টানতে সহায়তার কাজটিও করছিল। এ ছাড়া সে যার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাকে আবার ফোন করে জানিয়েছে। তখন অপর প্রান্ত থেকে তাকে শাবাশ দেওয়া হয়। তাকে কিশোর সংশোধনাগারে রেখেছি। আইন অনুযায়ী তার ব্যবস্থা হচ্ছে।’
অন্য যাঁদের প্রাণহানি হয়েছে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবার জন্যই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাদের দেখতে গেছেন এবং তাদের কিছু নগদ টাকা সাহায্যও করেছেন। আমরা মনে করি, এই ঘটনাগুলো আমাদের পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী ইচ্ছা করে কিংবা কারও প্ররোচনায় করে নাই। মানুষের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করার জন্যই তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। পুলিশ অনেক ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’
কারফিউ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন (বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য) করতে সরকার বাধ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, জানমালের সুরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে। এ বিষয়টি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে জানানো হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, শুধু ছাত্ররাই শাহাদত বরণ করেছে তা নয়, এখানে পুলিশ, আনসার, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ মারা গেছেন।