রংপুর বিভাগের তিন জেলায় থাকা ৩৩৫টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের দাখিল করা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য এসেছে। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক–আল–জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয়। আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ জুলাই দিন রেখেছেন।
রিট আবেদনকারীপক্ষ জানায়, সারা দেশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০২২ সালে একটি রিট করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি। এ অবস্থায় আদেশ অনুসারে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
গত ১৫ মে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রতিবেদন অনুসারে রংপুর বিভাগে ৮১২টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে ১৮টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন হাইকোর্ট অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করার বিষয়ে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান। পাশাপাশি ৩০ মে দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়ে প্রতিবেদন (কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট) দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এ অনুসারে আজ বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালিপদ মৃধা।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিভাগীয় কমিশনারের প্রথম দাখিল করা প্রতিবেদন অনুসারে ৮১২টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে মাত্র ১৮টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের এবার দাখিল করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রংপুর বিভাগের তিন জেলায় থাকা ৫০২টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৩৩৫টি বন্ধ করা হয়েছে।
রংপুর জেলার ১৭২টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ১১৪টি, গাইবান্ধা জেলার ১৫৫টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৮৭টি এবং দিনাজপুর জেলার ১৭৫টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ১৩৪টি বন্ধ করা হয়েছে। রংপুর বিভাগের অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধে আদালতের নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়নের বিষয়ে আগামী ২৭ জুলাই বিভাগীয় কমিশনারকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান মনজিল মোরসেদ।