রাজধানীর শাহবাগ থানায় আটক দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকেরা। থানা থেকে বের হওয়ার পর একজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
রাজধানীর শাহবাগ থানায় আটক দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকেরা। থানা থেকে বের হওয়ার পর একজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

শাহবাগ থানা থেকে দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিলেন ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকেরা

রাজধানীর শাহবাগ থানায় পুলিশের হাতে আটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিলেন ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকেরা। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে শিক্ষকদের একটি দল মৌন মিছিল নিয়ে থানায় গিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে নেয়।

শাহবাগ থানা থেকে মিছিল নিয়ে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাবেশ’ করেন শিক্ষকেরা।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী বলেন, থানায় দুই ছাত্রকে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে একজনের কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিও নেওয়া হয়েছে এই বলে যে সে সরকার পতনের আন্দোলনে ছিল। এ ধরনের নিপীড়ন–অত্যাচার চলছে।

রুশাদ ফরিদী আরও বলেন, ‘এটা তো আসলে নতুন কোনো কিছু না। এই নিপীড়ন আকাশ থেকে পড়েনি। বছরের পর বছর এই নিপীড়ন চলেছে ক্যাম্পাসে। বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে এটা কল্পনা করা যায় না যে একটি ক্যাম্পাসে প্রতিদিন একজন ছাত্র নিপীড়িত হন। শিক্ষকেরা হলগুলো নামমাত্র চালান। আসলে হল চালায় আরেকজন ছাত্র, তার কথাতেই শিক্ষার্থীদের জীবন ধারণ করতে হয়।’

রাজধানীর শাহবাগ থানা থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গিয়ে সমাবেশ করেন ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকেরা। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থী আটকের খবর পেয়ে মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানায় গিয়ে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পুলিশ দুই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয়।

থানা থেকে বের হয়ে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আহত অবস্থায় পুলিশ আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাতের অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে আমাকে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরে আমি এক ডাক্তারকে ইশারা করে ডেকে আমার ফ্যামিলির (পরিবার) একটা নম্বর দিই। সেখান থেকে আমাকে এখানে (শাহবাগ থানায়) নিয়ে আসা হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা থানা থেকে যতটুকু জেনেছি, আমাদের ছাত্ররা বলেছে, থানায় তাদের ওপর ফিজিক্যাল (শারীরিক) অত্যাচার হয় নাই। কিন্তু ছাত্রদের এভাবে যোগাযোগ করতে না দিয়ে আটক করে রাখা একটা মেন্টাল টর্চার (মানসিক নির্যাতন)। আমি মনে করি, যারা গুলি করে, যারা মানুষ মারে, তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে না। যারা আক্রান্ত হয়, তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এটাই হয়ে গেছে বাংলাদেশের চেহারা। এটা দুঃখজনক।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে মঙ্গলবার ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুজন ও রংপুরের একজন রয়েছেন। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।