আলোচনায় বক্তারা

প্রতিষ্ঠিত নারীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন

‘ডিজিটাল: ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুইটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত আলোচক ও সাংবাদিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে
ছবি: খালেদ সরকার

নারী যখনই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন, প্রযুক্তির ওপর ভর করে নিজেরা সাবলম্বী হচ্ছেন, তখনই তাঁরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। সাইবার নিরাপত্তা ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে নারীদের জানতে হবে এবং আত্মবিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নারী দিবস উপলক্ষে ‘ডিজিটাল: ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুইটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যত দিন নারী–পুরুষ একসঙ্গে চলতে পারবে না, সে সমাজ এগোতে পারবে না। পুরুষেরা নারীদের এগিয়ে যাওয়ায় সঙ্গে থাকলে তা অনুপ্রেরণা দেয়। প্রযুক্তির মাধ্যমেও কীভাবে সমতা আনা যায়, সে বিষয়ে ভাবতে হবে। প্রযুক্তির সুবিধা–অসুবিধা জানতে হবে। নিজেকে সুরক্ষিত রেখে চলতে হবে।

ফরিদা ইয়াসমিন আরও বলেন, কোনো নারী যখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হন, সাবলম্বী হচ্ছেন বা ভালো জায়গায় যাচ্ছেন, তখনই সাইবার বুলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে তাঁকে।

পিতৃতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন সমাজের তা ভালো লাগে না। নারীরাই বুলিংয়ের টার্গেট হচ্ছেন। তবে এসবে কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার কথা বলেন তিনি। এ ছাড়া বলেন, দেশ স্মার্ট হতে যাচ্ছে, প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদেরও প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হতে হবে।

সভায় মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান (জোহা)। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীরা যখনই এগিয়ে যেতে চেয়েছেন, তখনই সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ডিজিটাল সমাজের কথা বললেও মানসিকতা সেখানে পৌঁছায়নি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো নারী প্রতিবাদ করলে বা অভিযোগ করলে তাঁর নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলাসহ তাঁকে হয়রানির নানা উপায় বের হয়। বাংলাদেশ স্মার্ট হবে, মানসিকতাও স্মার্ট হতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলো নারীরা কতটা জানেন এবং এ ধরনের প্রকল্প ও প্রশিক্ষণে তাঁদের অংশগ্রহণ কতটা, তা ভাবতে হবে এবং তাঁদের এসব বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে জানান তানভীর হাসান।

স্বাগত বক্তব্যে শ্যামল দত্ত বলেন, প্রযুক্তি যেমন নানা সুবিধা দিয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, প্রযুক্তি যেমন সমাজে বিপ্লব এনেছে, তেমনি নারীসমাজে কিছু বৈষম্যেরও সৃষ্টি করেছে। প্রযুক্তি সমতা এনেছে কি না, তা মূল্যায়ন করা দরকার।

জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জুলহাস আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র সহসভাপতি হাসান হাফিজ, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বখতিয়ার রাণা, ফরিদ হোসেন প্রমুখ।