বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি দেখাতে এই কূটনীতিকদের নেওয়া হয়েছে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি দেখাতে এই কূটনীতিকদের নেওয়া হয়েছে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আট দেশের দূত রাখাইন পরিদর্শনে

হঠাৎ করে বাংলাদেশে আশ্রিত হাজারখানেক রোহিঙ্গাকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় রাখাইনে ফেরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমার। প্রত্যাবাসন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আসিয়ান জোটের আটজন দূতকে মংডু এবং সিটুওয়েক প্রত্যাবাসন শিবিরগুলো সরেজমিনে দেখানো হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে। ইয়াঙ্গুনের কূটনৈতিক সূত্র গত রাতে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

কূটনৈতিক সূত্রটি জানিয়েছে, গত বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাখাইনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন দূতেরা।

ঢাকা ও নেপিডোর দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার এই প্রথম রাষ্ট্রীয় আয়োজনে দলবদ্ধভাবে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আসিয়ানের দূতদের রাখাইন পরিদর্শনে নিয়ে গেল।

সূত্রমতে, সফরের প্রথম দিনে দূতদের টেকনাফ সীমান্তের ঠিক উল্টো দিক নাফ নদীর তীরে নকুইয়া গ্রামে পাঁচ বছর আগে স্থাপিত অন্তর্বর্তীকালীন শিবিরের সংস্কার কাজ দেখানো হয়। জানানো হয়, জলপথে যাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, তাদের প্রথম কিছুদিন ওই শিবিরে রাখা হবে। পরে তাদের মংডুর লাপুখা শিবিরে নেওয়া হবে। সেখানে মাসখানেক রেখে তাদের মংডু এবং সিটুওয়েকের কাছে নির্মাণাধীন শিবিরগুলোতে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে।

সূত্রমতে, চীনের বিনিয়োগ তৈরি হতে যাওয়া তেল কোম্পানি এবং গভীর সমুদ্রবন্দরে জন্য বিখ্যাত চাকফু এলাকায় ২০১২ সাল থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের যে শিবির ছিল, তা–ও কূটনীতিকদের দেখানো হয়। সেই সঙ্গে বলা হয়, ওই শিবিরগুলো বন্ধ করে পাশের গ্রামে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে  স্থানান্তর করা হবে। ওই এলাকায় একটি মসজিদের অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান রয়েছে বলে দূতদের দেখানো হয়।

কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে—এমন কোনো ধারণা মিয়ানমার দিয়েছে কি না, জানতে চাইলে রাখাইন সফরে যাওয়া একজন দূত এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রত্যাবাসনের কোনো দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। তবে পাইলট প্রজেক্টের আওতায় তারা হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়। এর মাধ্যমে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তারা যে আন্তরিক, সেটা বোঝানোর চেষ্টা করবে।  

এ দিকে রাখাইনে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের দূতদের সফরের খবর প্রচারের পর থেকে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও পূর্ণ অধিকারের নিশ্চয়তা ছাড়া প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছে।