চবি ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের বাদ দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে চবি ছাত্রলীগের একাংশের মানববন্ধন
ছবি: প্রথম আলো

বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের একদল নেতা-কর্মী। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান তাঁরা। এর আগে ১০ আগস্ট একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছিল। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেন তাঁরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাতটি উপপক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। উপপক্ষগুলো হলো—ভার্সিটি এক্সপ্রেস, বাংলার মুখ, একাকার, এপিটাফ, রেড সিগন্যাল, কনকর্ড ও উল্কা। এ উপপক্ষগুলো সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

এ সময় ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, তিন বছর পর শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেটার মেয়াদ আরও দুই বছর আগেই শেষ হয়েছে। কমিটিতে অযোগ্য ও বিতর্কিত অনেককেই জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বাদ দিয়ে যোগ্যদের স্থান দিতে হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, কমিটিতে বিবাহিত ও চাকরিজীবী রয়েছেন, এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে তাঁদের পদ বাতিলের ব্যবস্থা করা হবে। আর যে নেতা–কর্মীরা মানববন্ধন করেছেন, তাঁরা অন্য পক্ষের।

এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।

গত ৩১ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩৭৬ সদস্যের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর পরপরই পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি হলের অন্তত ৩০টি কক্ষ ভাঙচুর করেন। এদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিয়ে অবরোধের ডাক দেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা নতুন শাখা কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ অচল অবস্থা অব্যাহত থাকে ২ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি বিভাগের ১১টি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর, আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) মহিবুল হাসান চৌধুরীর, বাকি ৯টি উপপক্ষ আ জ ম নাছিরের অনুসারী। তবে দুই নেতাই বিভিন্ন সময় বলে এসেছেন, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তাঁদের কোনো পক্ষ নেই।