বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে পরিস্থিতি চলেছে, বর্তমান সরকারের সময়ে এসেও সেই অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইউপিডিএফের নেতা–কর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারসহ এ অঞ্চলের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) সহসভাপতি কুনেন্টু চাকমা আজ রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলেন এসব কথা বলেছেন। ‘পাহাড়ে সেনা-গোয়েন্দা সংস্থার খবরদারি ও দীর্ঘ পাঁচ বছর আট মাসের কারাজীবনের বিবরণ’ তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কুনেন্টু চাকমা বলেন, ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ৫ বছর ৮ মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। পরে গত ১৬ অক্টোবর জামিনে মুক্ত হন। এই কারাবাসের সময়ে তিনি রাষ্ট্রীয় বাহিনী, প্রশাসন ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নিপীড়নের শিকার হন বলে দাবি করেন।
এই পাহাড়ি ছাত্র নেতা জানান, ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালত থেকে জামিন দেওয়া হলেও জেলগেট থেকে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট আবারও জামিনের আদেশ হলে কারাগার থেকে রাঙামাটি ব্রিগেডে নিয়ে যায় এবং পথে কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে দেয়। তাঁকে নির্যাতন কেন্দ্রের (টর্চার সেল) ভেতরে রাখা হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কিছু দাবি তুলে ধরেন কুনেন্টু চাকমা। দাবিগুলো হলো, আটক ইউপিডিএফ ও তাঁর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মুক্তি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, জামিনের পর জেলগেট থেকে পুনরায় গ্রেপ্তার বন্ধ, গত ৩০ অক্টোবর এবং গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দমনমূলক ১১ দফা নির্দেশনা বাতিল, খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল রানা গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং ‘অপারেশন উত্তরণ’ বাতিল করে রাজনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।