আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়, বিরোধী দলের ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মহাসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকার তৎপর। সরকারের তৎপরতার মধ্যে রয়েছে গ্রেপ্তার, অভিযোগ গঠন, এমনকি রাতের বেলায় আদালত বসিয়ে বিচার।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীনরা সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ইউরেনিয়াম ব্যবহারের হুমকি। এই অভিযোগগুলো কীভাবে দেখছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর? বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে?
জবাবে মিলার বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট এই অভিযোগের বিষয়ে আমার কিছু বলার আছে বলে মনে হয় না। নির্বাচন সামনে রেখে আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
মিলার আরও বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব অংশীদারদের শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আছে সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম ও অবশ্যই ভোটারেরা। তাঁরা সব অংশীদারদের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পাশাপাশি সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে যাবেন।
আরেক প্রশ্নে বলা হয়, সম্প্রতি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি কথা বলেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বলেছেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কেন তার দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চাইছে?
আর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শুধু তাঁর নিজের নিরাপত্তা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেননি, তিনি দূতাবাসের অন্য কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছেন। তিনি (মুখপাত্র মিলার) নিজে এখানে দাঁড়িয়ে বারবার ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাই এই বিষয়ে মুখপাত্রের মন্তব্য কী, তা জানতে চান প্রশ্নকারী।
জবাবে মিলার বলেন, তিনি আবার বলবেন, ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, কূটনৈতিক অঙ্গন ও কর্মীদের সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তাঁরা আশা করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব মিশনসহ কূটনীতিকদের সুরক্ষা-নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।