একদল ব্যক্তির বিক্ষোভের মুখে ‘নিত্যপূরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী মাঝপথে বন্ধ হওয়ার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির সামনে সমাবেশ করছিলেন নাট্যকর্মীরা। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ওই প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে সেখানে ডিম ছুড়ে মেরেছেন একদল ব্যক্তি। এসব হামলাকারী কারা, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘড়িতে তখন বিকেল পাঁচটা বাজে। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সমাবেশও প্রায় শেষের দিকে। নাট্যকার ও অভিনেতা মামুনুর রশীদের বক্তব্য চলছিল। মামুনুর রশীদ বলছিলেন, ‘সমাজে যে বৈষম্য, সে বৈষম্যেরও একটা গভীরতর বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এই “নিত্যপূরাণ” নাটক। যা–ই হোক, আপনারা এসেছেন...।’ এরপরই ‘ধর, ধর’ চিৎকারে চারদিকে শোরগোল শুরু হয়।
সে সময়ই সমাবেশের পেছনে অর্থাৎ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভবনের দিকে থেকে ডিম ছুড়ে মারা হয়। সমাবেশে অংশ নেওয়া নাট্যকর্মীরা চেয়ার ছেড়ে সেদিকে ছুটে যান। কয়েক মিনিটের হইচই শেষ হলে মামুনুর রশীদ তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। পরে সমাবেশ চালিয়ে যান আয়োজকেরা।
২ নভেম্বর দেশ নাটকের ‘নিত্যপূরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী চলার মাঝপথে সেটি বন্ধ করার দাবিতে শিল্পকলা একাডেমির সামনে বিক্ষোভ করেন একদল লোক। এই পরিস্থিতির মধ্যে দর্শকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রদর্শনীর মাঝপথে ওই নাটক বন্ধ করে দেয় শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন।
শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশদ্বারের মুখে সমাবেশে শ খানেকের বেশি নাট্যকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে ডিম ছুড়ে মারার পর বক্তব্যে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সভা শেষ করব না। ভেতরে নাটক হবে, বাইরে আমরা পাহারা দেব। এই দুষ্কৃতিকারীদের দেখে ছাড়ব।’
ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা মহানগর) তপন হাফিজ এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সমাবেশ শেষ হচ্ছিল। এর মধ্যে অতর্কিতভাবে কিছু দুষ্কৃতিকারী পেছন থেকে ডিম ছুড়ে মারে।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে ১৫ নভেম্বর সারা দেশে প্রতিবাদ সভা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ শিল্পকলায় একটি নাটকের প্রদর্শনী চলছে। সে প্রদর্শনী শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা সমাবেশস্থলে অবস্থান করবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজিদ, দেশ নাটকের দলপ্রধান নাট্যকার মাসুম রেজা, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক প্রমুখ।