‘জুলাই-আগস্টের শহীদরা যত দিন আমাদের হৃদয়ে থাকবেন, তত দিন এই একতাবদ্ধতাকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না। যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন, সেই ষড়যন্ত্রকে বাংলাদেশের জনগণ প্রতিহত করবে।’
আজ শনিবার সকালে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এ সময় কমিটির অন্য সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আখতার হোসেন বলেন, ‘একাত্তরে যাঁরা বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলতে পারতেন, বাংলাদেশকে গড়তে পারতেন—তেমন পেশাজীবী, আইনজীবী, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। আপনারা দেখে থাকবেন, আমরা এমন একটা বছরে আছি, দুই হাজার তরুণ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল, বৈষম্যবিরোধী যে স্লোগান, সমতার যে স্লোগান, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে চেতনা, সেটাকে যেন দাবিয়ে রাখা যায়।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আরও বলেন, ‘যাঁরা প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন, প্রতিটি সময়ে তাঁরাই হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। সেই জায়গা থেকে চব্বিশের ১৪ ডিসেম্বর আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে। আমরা মনে করি, আমাদের একটা দীর্ঘ লড়াই আছে। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী অঙ্গনে অনেকেই আছেন, যাঁরা ১৫ বছর ধরে এই ফ্যাসিবাদের শাসন আমলকে বৈধতা দিয়ে গেছেন। আজকের বুদ্ধিজীবী দিবসে আমরা তাঁদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসকে যে আওয়ামীকরণ করা হয়েছে, তার থেকে মুক্ত করার যে বুদ্ধিদীপ্ত লড়াই চলছে, তাতে তরুণেরা নিয়োজিত হয়েছেন। আমাদের তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামীকরণের জায়গার মধ্য থেকে বের করে আনতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সব সময় একাত্তরের ইতিহাস পকেটস্থ করতে চেয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যত সংগ্রামের ইতিহাস, আওয়ামী লীগ কখনো তা ধারণ করেনি। তারা একাত্তরের ইতিহাসকে পকেটস্থ করতে চেয়েছে। এর মাধ্যমে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন— বুদ্ধিজীবী—তাঁদের মুছে ফেলতে চেয়েছে।
সামান্থা শারমিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার ত্যাগের ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান এগুলো আবার ফিরিয়ে এনেছে। আমরা মনে করি, অভ্যুত্থানের যে তরুণ নেতৃত্ব, আগামী দিনে তারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে।’